টেকনাফে প্রবল বৃষ্টিতে ১০,০০০ মানুষ পানিবন্দী

কক্সবাজার, দেশের খবর

উপজেলা করেসপেন্ডেন্ট, বার্তাটোয়ান্টিফোর.কম, টেকনাফ | 2023-08-19 10:11:53

প্রবল বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ায় টেকনাফ উপজেলায় অর্ধশতাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ১০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। ভুক্তভোগীদের দাবি খাল দখলের কারণে বৃষ্টির পানি সরতে না পারায় তাদের বাড়ি-ঘর তলিয়ে গেছে। এদিকে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) উপজেলা প্রশাসন মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করেছে। এমনকি টেকনাফ সরকারি ডিগ্রি কলেজও এখন পানিবন্দী।

মঙ্গলবার সরেজমিনে টেকনাফ পৌরসভার, হ্নীলা, বাহারছড়া, সাবরাং ও হোয়াইক্যংয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রবল বৃষ্টির পানিতে প্রায় অর্ধ শতাধিক গ্রামে দশ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছেন। আর এলাকা ঘুরে মানুষের খোঁজখবর নিতে দেখা গেছে টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আলম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল হাসান প্রমুখকে।

পরিদর্শনকালে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রবিউল হাসান বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে স্থানীয়দের ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনা খাবার দেওয়া হবে। তাছাড়া বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাও করা হচ্ছে।’

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘পৌরসভার প্রভাবশালীরা খাল দখল করে রাখায় পানি সরতে পারছে না। পরে এই পানিতে গ্রাম তলিয়ে যাচ্ছে। তবে খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পৌরসভার বাসিন্দা মোস্তাক মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে হোছেন আহম্মদ, আবদুল হক, মা-করিম, শফিউল্লাহসহ কয়েকজন প্রভাবশালী খাল দখল করে রেখেছেন। এতে বৃষ্টি পানি জমে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আগে বৃষ্টির পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যেত না।

তিনি আরও জানান, খাল দখলমুক্ত না হওয়ায় প্রতি বছর বৃষ্টিতে শতাধিক পরিবারকে পানির নিচে বসবাস করতে হয়। তাই খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দিলদার বেগম (৫৫) জানান, টানা বৃষ্টিতে তার একমাত্র ঘর ধসে গেছে। তিনি এখন জানেন না পরিবার সদস্যদের নিয়ে কোথায় যাবেন। একমাত্র আশ্রয়কেন্দ্র হারিয়ে শূন্য হয়ে পড়েছেন তিনি। সকাল থেকে পরিবারের কেউ খাবার খেতে পারেনি।

মূলত খাল দখলের কারণে তাদের এই অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘আমার এলাকায় প্রায় হাজার মানুষের ঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাদের খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে।’

টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘গোটা উপজেলায় অর্ধশতাধিক গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়া বেশ কিছু ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এলাকায় পানের বরজ, বীজতলাসহ ব্রিজ, কালভার্ট ও ২০ কিলোমিটারেরও বেশি গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। পানিবন্দী মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সাহায্য করা হবে।‘

এ সম্পর্কিত আরও খবর