গাইবান্ধায় মেটে আলুর বাণিজ্যিক চাষ

গাইবান্ধা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটুয়েন্টিফোর.কম, গাইবান্ধা | 2023-09-01 06:53:47

কন্দাল জাতীয় ফসল মেটে আলু। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এর রয়েছে বিভিন্ন নাম। যেমন—পেস্তা আলু, চুপরি আলু, মাচা আলু, গজ আলু, মোম আলু, মাইট্টা আলু, মাছ আলু, প্যাচড়া আলু, লেমা আলু, ধুসড়ী আলু, আলতাপাট, হরিণখালি, হাতি পায়া, মৌ আলু ও মঘু আলু। তবে কৃষি বিভাগের ভাষায় এর নাম—মেটে আলু। এটা একবীজপত্রী লতানো উদ্ভিদ।

ওল, গোল আলুর মতোই ভর্তা কিংবা মাছ ও মাংসের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায় মেটে আলু। রান্নায় সবজি হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও পুড়িয়ে বেশ মুখরোচক খাবার হিসেবে মেটে আলু খায় বিভিন্ন জেলার মানুষ।

মেটে আলু গাইবান্ধা জেলায় ‘পুড়া আলু’ হিসেবে অধিক পরিচিত। এক সময়ে গাইবান্ধা জেলার প্রায় বাসা-বাড়িতেই লাগানো হতো মেটে আলু। বাড়ির চারপাশে গাছের নিচে, আঙিনা ও বেড়া ঘেঁষে মেটে আলু রোপণ করা হতো। সম্প্রতি মেটে আলু বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করছেন গাইবান্ধার কৃষকরা।

জাতভেদে মাটির নিচে প্রতিটি আলু ৩ কেজি থেকে ২৫-৩০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর কোনটা ডিম্বাকৃতি, কোনটা লম্বাটে, কোনটা হাতির পায়ের মতো কিংবা হরিণের মাথার আকৃতির হয়ে থাকে। জাতভেদে গোলাপি, ধূসর কিংবা মেটে রঙের হয়। মাটির নিচের আলু ছাড়াও লতানো গাছে ডিম্বাকৃতি ও লম্বাটে ১০০-১৫০ গ্রাম ওজনের অনেক আলু ঝুলন্ত অবস্থায় ধরে থাকে। লতায় ধরে বলে মেটে আলু কিছু এলাকায় পাতাশি নামে পরিচিত।

বেশ কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে মেটে আলুর চাষ করছেন গাইবান্ধার ধাপেরহাট এলাকার ইসলাম গ্রামের কৃষক গফুর আলী। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি জানান, প্রতি বিঘা জমিতে মেটে আলু চাষে তার খরচ হয় ১৩-১৫ হাজার টাকা। যা থেকে প্রায় ৪০-৪৫ মণ ফসল উৎপাদন করা সম্ভব। বাজারে দাম ভালো পেলে ৩০-৩৫ হাজার টাকার আলু বিক্রি করেন গফুর আলী।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. এস এম ফেরদৌস বলেন, মেটে আলু আদিকাল থেকে বসতবাড়িতে চাষ হয়ে আসছে, তবে তা কেবল নিজেদের চাহিদা মেটাতে। বর্তমানে কৃষকদের সচেতনতা বাড়ায় তারা বাণিজ্যকভাবে মেটে আলু চাষাবাদ করে ভালো মুনাফা পাচ্ছেন। মেটে আলু ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের খুব ভালো উৎস।

এ সম্পর্কিত আরও খবর