বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। এই চার্জশিটে দুই ভাগে আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ১৮ বছর যাদের বয়স তাদের বিরুদ্ধে এক ভাগে ও ১৮ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের জন্য আরেক ভাগে মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে এই চার্জশিট দেওয়া হয়। চার্জশিটে সাক্ষী করা হয়েছে ৭৫ জনকে।
একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এদিকে হত্যায় সরাসরি জড়িত মুসা বন্ডসহ মামলার এজাহারে থাকা চার আসামিকে গ্রেফতার করা না গেলেও তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বরগুনা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন আদালতে চার্জশিট জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রোববার বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করা হয়।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট মামলার আসামিদের নিয়মিত হাজিরার দিন ছিল। সেই দিনই চার্জশিট দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা পিছিয়ে গত ২২ আগস্ট দেয়ার কথা থাকলেও তা দিতে পারেনি পুলিশ। নতুন করে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর ওই চার্জশিট দাখিলের তারিখ ধার্য করা হয়েছিল। পরে ধার্য তারিখের আগেই ১ সেপ্টেম্বর বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করা হয়।
১৮ বছরের ঊর্ধ্বে চার্জশিটভুক্তরা হলেন- মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯), মো. মুসা (২২) , আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯), কামরুল হাসান সায়মুন (২১)
১৮ বছরের নিচের চার্জশিটভুক্তরা হলো যথাক্রমে- মো. রাশিদুল হাসান রিশান ওরফে রিশান ফরাজী (১৭), মো. রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার (১৫), আবু আবদুল্লাহ্ ওরফে রায়হান (১৬), মো. ওলিউল্লাহ্ ওরফে অলি (১৬), জয় চন্দ্র সরকার ওরফে চন্দন (১৭), মো. নাইম (১৭), মো. তানভীর হোসেন (১৭), মো. নাজমুল হাসান (১৪), মো. রাকিবুল হাসান নিয়ামত (১৫), মো. সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ ওরফে মহিবুল্লাহ (১৭), মারুফ মল্লিক (১৭), প্রিন্স মোল্লা (১৫), রাতুল শিকদার জয় (১৬) ও মো. আরিয়ান হোসেন শ্রাবন (১৬)।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেওয়ার পর মারা যান তিনি। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি উল্লেখ করে ও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় এখন পর্যন্ত মিন্নিসহ ১৬ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এখনো গ্রেফতার হননি হত্যায় সরাসরি জড়িত মুসা বন্ডসহ মামলার এজাহারে থাকা ৪ আসামি। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
আরও পড়ুন: মিন্নির জামিনের পূর্ণাঙ্গ রায়: বরগুনার এসপি'র পেশাদারিত্ব প্রশ্নবিদ্ধ