হাসপাতালের মেঝেতেই চলছে চিকিৎসা সেবা

ঠাকুরগাঁও, দেশের খবর

নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঠাকুরগাঁও | 2023-08-18 19:51:15

বেডের কোন ব্যবস্থা নেই। অনেক রোগী কোন বেড না পেয়ে ফ্লোরে থাকছেন। কষ্ট হলেও কোন উপায় না পেয়ে এভাবেই পার করতে হচ্ছে দিন। যদি দ্রুত পাশের নতুন ভবনটি চালু করা হয় তাহলে হয়তো রোগীদের এতো কষ্ট করে এভাবে ফ্লোরে থাকতে হবেনা।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ঠিক এভাবেই বার্তাটোয়েন্টিফোরের ক্যামেরায় কথাগুলো বলছিলেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী মকবুল ইসলাম ও তার স্বজন লুৎফর রহমান সহ চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা অনেকেই। দ্রুত এই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নতুন ভবনটি চালু করার দাবি জানান তারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বারান্দার মেঝেতে শুয়ে রয়েছেন অনেকে রোগী। কেউবা সিট না পেয়ে সিঁড়ির ফাঁকেই জায়গা করে নিচ্ছেন চিকিৎসা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এই আধুনিক সদর হাসপাতালে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় ছাড়াও দিনাজপুর-নীলফামারী থেকে প্রতিদিন প্রায় চার থেকে পাঁচ'শ রোগী আসছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে পাওয়া যাচ্ছে না যথাযথ সেবা। ফলে দিনের পর দিন বেড়েই চলছে এখানে দুর্ভোগ।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৯মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁও সফরে এসে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করণের জন্য সাত তলা বিশিষ্ট ভবন উদ্বোধন করেন। কিন্তু আজ দিয়ে উদ্বোধনের দেড় বছর পার হয়ে যাবার পরেও এখনো নতুন ভবনটি হস্তান্তর করা হয়নি হাসপাতাল কৃর্তপক্ষের কাছে।

তবে নির্মাণকাজের গতি কম হওয়ার কারণে এখনো ভবনটি হস্তান্তর করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মালেক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান, নির্মাণ কাজের সময় পুরনো ভবন অপসারণে দেরী হওয়ায় কাজ শেষ করতেও দেরি হয়েছে। তবে বর্তমানে আমাদের কাজ প্রায় শেষের পথে। যেকোন সময় আমরা এই ভবনটি হস্তান্তর করতে পারি।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী আনসারুল ইসলাম জানান,গত তিন দিন আগে হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু এখানে আজও পর্যন্ত কোন সিট পেলাম না। এরপর আবার যা ভিড়। প্রায় সব জায়গায় বারান্দায় শুয়ে থাকে অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। যার ফলে চলাফেরার অনেক সমস্যা হয়।

পঞ্চগড় জেলা রোগীর সাথে দেখা করতে এসেছেন আরিফ নামের এক ব্যক্তি। তিনি জানান,শুনেছিলাম যে সদর হাসপাতাল নাকি ২৫০ শয্যা হাসপাতালের উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু এখানে আসে তো দেখি ভিন্ন চিত্র। কমবেশি প্রতিটি জায়গায় মেঝেতেই শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। এভাবেই চললে তো রোগীরা আরো বেশি সমস্যার মধ্যে পড়ে যাবেন। পাশের নতুন ভবনটি দেখা যাচ্ছে কিন্তু চালু হয়নি। এটা চালু করা একান্ত প্রয়োজন।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.প্রভাষ কুমার দাশ জানান, যে গতিতে এই নতুন ভবনের কাজ হওয়ার কথা ছিলো সেভাবে কাজটি হয়নি। যার কারণেই এখনো পর্যন্ত তারা ভবনটি হস্তান্তর করতে পারেনি।

ঠাকুরগাঁও গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান সরকার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান, আধুনিক সদর হাসপাতালের এই কাজটির প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। দরপত্র অনুযায়ী আগামী ০২ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিংয়ে আমরা এটা হস্তান্তর করবো।

এ সম্পর্কিত আরও খবর