কালচারাল একাডেমির বেহাল দশা, হুমকিতে রাখাইন সংস্কৃতি

বরগুনা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, বরগুনা | 2023-08-31 12:16:55

বরগুনায় আদিবাসী রাখাইন সংস্কৃতি চর্চার জন্য কালচারাল একাডেমি ভবন না থাকায় সাংস্কৃতিক চর্চা হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে রাখাইনের এই দুইশ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি হুমকির মুখে পড়েছে আজ। কয়েক যুগ আগে রাখাইনদের সংস্কৃতি চর্চার জন্য কালচারাল একাডেমি নামে একটি ভবন নির্মাণ করে দেয় সরকার। সেই কালচারাল একাডেমির এখন বেহাল দশা। রাখাইনরা বলছেন, সংস্কৃতি চর্চার জায়গা না থাকলে হারিয়ে যাবে তাদের এই সংস্কৃতি। আর প্রশাসন বলছে দ্রুত সংস্কার করে রাখাইনদের সংস্কৃতি চর্চার জায়গা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে বরগুনা জেলায় ১৩টি পাড়ায় প্রায় ৬ শতাধিক রাখাইন পরিবার রয়েছে। এদের একমাত্র সংস্কৃতি চর্চার জায়গা ছিল এই কালচারাল ভবনটি। প্রায় ৩ যুগ আগে রাখাইনদের সংস্কৃতি চর্চার জন্য তালতলী উপজেলার রাখাইন পাড়ায় একতলা একটি ভবন নির্মাণ করেছিল তৎকালীন সরকার। তবে ভবনটি নির্মাণের স্বল্প সময়ের মধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

এদিকে রাখাইন সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি চর্চার জন্য একমাত্র এই ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ার পর ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে রাখাইন সম্প্রদায়ের দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমপি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। তবে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের পর নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়নি ৯ বছরেও।

তালতলী রাখাইন পাড়ার ওয়েং, ওমেংচো, খেমংসহ অনেকে জানান, ভবনের পাশাপাশি তাদের সংস্কৃতি চর্চার জন্য শিক্ষক ও যে সকল সরঞ্জাম দরকার তার কিছুই নেই এখানে। ফলে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম যারা আসবে তারা কেউই তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে সাধারণ ধারণাও থাকবে না। রাখাইন শিক্ষকের অভাব, পাঠ্যপুস্তকের সংকট এবং সরকারি উদ্যোগ না থাকায় রাখাইন ভাষার চর্চা থেমে গেছে। এর ফলে রাখাইনদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সংগীত ও নৃত্য হারিয়ে যেতে বসেছে।

রাখাইনদের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাংচিন থান বলেন, ‘আমরা সংখ্যালঘু হওয়ায় আমাদেরকে অবহেলা করছে সবাই। দীর্ঘদিন ধরে একটি ভবনের জন্য রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার কাছে ধরনা দিয়েও কোনো কাজে আসেনি। সরকারের কাছে দাবি জানাই কালচারাল ভবনটি সংস্কার করে আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচাতে।'

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ্ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, রাখাইনদের সংস্কৃতি চর্চার স্থানে নতুন ভবন তৈরিসহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা তিনি গ্রহণ করবেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমপি এর সাথে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর