চালের ফুটো দিয়ে আকাশের তারা গুনে ঘুমিয়ে পড়েন মোমেনা

কুড়িগ্রাম, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটোয়েন্টিফোর. কম, কুড়িগ্রাম | 2023-09-01 23:26:10

দুর্দশাগ্রস্ত আর ভাগ্য বিড়ম্বিত নারী কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নদিরকুটি গ্রামের মোমেনা বেওয়া (৬৫)। বৃদ্ধ বয়সে অনেকেই সরকারি-বেসরকারি সাহায্য পেলেও এ পর্যন্ত কিছুই জোটেনি মোমেনার ভাগ্যে।

নিত্য অভাব আর অসুস্থতাকে সাথে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে তার দিন কাটে। রাতেও ঘুমাতে পারেন না। বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি ঘর, আর পলিথিনের ছাউনি। বৃষ্টি এলে ঘরের এক কোণে গুটিসুটি মেরে নির্ঘুম রাত কাটে। দুই সন্তানের জননী মোমেনার স্বামী গত হয়েছেন ২৫ বছর আগে। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জমানো টাকায় অনেক কষ্টে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র ছেলে বিয়ে করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তার আলাদা জীবন-যাপন। এখন মোমেনাকে দেখার কেউ নেই।

রোববার (১৮ আগস্ট) বিকেলে মোমেনার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র ছেলের ঘরটি তালাবদ্ধ। ভাঙা ঝুঁপরি ঘরের এক কোণে মাটিতে পাতা একটা ময়লা বিছানা। অন্যদিকে রান্নার চুলা। মোমেনা জানান, রাতে ঘরে শুয়ে চালের ফুটো দিয়ে আকাশের তারা গুনে ঘুমিয়ে পড়েন। বৃষ্টি আসলে বিছানার এক কোণে বসে রাত পাড় করেন। পরের দিন কাজ কাম ফেলে বিছানা কাপড় শুকাতে দেন।

মোমেনা বেওয়া কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বাহে মোর কাইয়ো নাই, কিছুই নাই। বুড়া বয়সে মানুষের বাড়িতে কামাই করি খাং বাহে। আর কদ্দিন বাঁচিম জানাং না। দুইমুঠো খাবার পায়া শুতি থাইকপার পাইলে এ্যাকনা শান্তি পানু হয়’।

তার প্রতিবেশি নুরজাহান বেগম জানান, মোমেনা বেওয়া বড়ই অভাগী। স্বামী মরার পরে ছেলেও দেখাশুনা করে না। অনেক কষ্টে দিন কাটে তার। বিধবা ভাতা ও একটা  ঘর পাওয়ার যোগ্য হলেও তার ভাগ্যে কিছুই জোটেনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাছুমা আরেফিন জানান, নতুন ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গেলে তাকে ঘর দেওয়া হবে। সেই সাথে তিনি বিধবা ভাতার আবেদন করলে যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর