গাইবান্ধায় অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল

গাইবান্ধা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, গাইবান্ধা | 2023-09-01 22:54:40

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গোলাপবাগ হাটসহ জেলার বিভিন্ন হাটে-বাজারে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার নিষিদ্ধ কারেন্টজাল অবাধে বিক্রি হচ্ছে। ফলে নদ-নদী ও খাল-বিলের ডিমওয়ালা মাছগুলো নির্বিকারে নিধন চলছে। ফলে এ এলাকায় নানা জাতীয় দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে।

জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া, বাঙ্গালী নদী, নুরুলের বিলসহ বিভিন্ন খাল-বিলে এখনো যথেষ্ট পরিমাণ দেশি মাছ পাওয়া যায়। বর্ষায় এসব নদী-নালা, খাল-বিলে মাছ ডিম ছাড়ায় প্রচুর রেণু-পোনা জন্ম নিয়েছে। বন্যার পানি কমতে শুরু করায় নদী ছাড়াও খাল-বিলে প্রচুর মাছ পাওয় যাচ্ছে। এ কারণে হাট-বাজারে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও উপজেলার-গোলাপবাগ হাটসহ বিভিন্ন হাট বাজারে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের জমজমাট বাজার বসেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গোলাপবাগ হাটে সপ্তাহের রোববার ও বৃহস্পতিবার হাটের দিন খোলাবাজারে প্রকাশ্যে প্রায় অর্ধশত ব্যবসায়ী চটি দোকান বসিয়ে, আবার কেউ দাঁড়িয়ে হাজার হাজার টাকার কারেন্ট জাল বিক্রি করে থাকেন। এছাড়া প্রতিদিন পাইকারি দরে লাখ লাখ টাকার কারেন্ট জাল এ হাটে বিক্রি হয়ে থাকে। এসব কারেন্ট জাল এই এলাকার দেশীয় মাছের ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলার রাখালবুররুজ ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামের লিটন মিয়া বলেন, ‘বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামের মানুষ কারেন্ট জাল কিনে এনে খাল-বিল, নদী
নালায় ব্যাপক হারে মাছ ধরছে। এভাবে মাছ ধরলে মাছের বংশ নির্বংশ হয়ে যাবে।‘

গোবিন্দগঞ্জ পৌর সভার কালিকাডোবা গ্রামের কহিনুর বেগম বলেন, ‘আমিসহ গ্রামের আনেকেই গোলাপবাগ হাট থেকে কারেন্ট জাল কিনে এনে তা সাজিয়ে বিক্রি
করি। এ বছর বন্যা ও ব্যপক বৃষ্টিপাত হওয়ায় ডোবা খাল-বিল নদীনালা সর্বত্র পানিতে ভরে যায়। সর্বত্র পানি থাকায় সাজানো কারেন্ট জাল বিক্রি করে আমরা
লাভবান হয়েছি।’

এদিকে, নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক ক্ষুদ্র জাল ব্যবসায়ী জানান, উত্তরবঙ্গের সব চেয়ে বড় কারেন্ট জালের পাইকারি ব্যবসার কেন্দ্র হলো গোবিন্দগঞ্জের গোলাপবাগ হাট। কয়েকজন ব্যবসায়ী এ হাটে লাখ টাকার অবৈধ কারেন্ট জালের পাইকারির ব্যবসা করে থাকেন। এ হাট থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা মূল্যের কারেন্ট জাল ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা পাইকারি মূল্যে কিনে নিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন হাটে বাজারে খুচরা বিক্রি করে থাকেন।

গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মুমু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘এবারে মৎস্য সপ্তাহে অভিযান পরিচালনা করে বেশ কিছু কারেন্ট জাল পুড়িয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর