পুকুর ভাড়ায় পাট জাগ, দুর্ভোগে চাষিরা

মেহেরপুর, দেশের খবর

মাজেদুল হক মানিক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, মেহেরপুর | 2023-08-27 06:09:06

আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে কৃষকের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটেছে। বিজ্ঞানের যুগান্তকারী নানা উদ্ভাবনের ফলে কৃষিকাজ হয়েছে সহজতর। কিন্তু পাটের আঁশ ছাড়ানোর সেই সনাতন পদ্ধতি আজও রয়ে গেছে।

একদিকে অনাবৃষ্টি অন্যদিকে খাল-বিল, নদী-নালা ভরাটের ফলে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কৃষকের দুর্ভোগের সীমা নেই। বাধ্য হয়ে অন্যের পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন মেহেরপুর জেলার কৃষকরা। আর একই পুকুরে বার বার পাট জাগ দেওয়ায় পাটের রং যাচ্ছে নষ্ট হয়ে। ফলে পাটের দাম কম পাচ্ছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। যা গত বছর ছিল ২৫ হাজার হেক্টরের উপরে। পাট চাষ নিয়ে নানা রকম সমস্যা ও দর পতনের ফলে চাষিরা অর্থকরী এই ফসল আবাদে বিমুখ হচ্ছেন।
https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/19/1566206669467.jpg

বানিয়াপুকুর গ্রামের কৃষক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বর্ষাকালে চাইলেই সব ফসল আবাদ করা যায় না। কিছু জমি আছে যেখানে একমাত্র পাট আবাদ করা যায়। ফলে বাধ্য হয়ে পাট আবাদ করতে হচ্ছে।

ভোমরদহ গ্রামের পাটচাষি মিলন হোসেন বলেন, ১ বিঘা জমির পাট জাগ দিতে পুকুর ভাড়া দিতে হচ্ছে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। একটি পুকুরে বার বার পাট জাগ দিতে গিয়ে পাটের রং নষ্ট হচ্ছে। ফলে দর কমে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: পুকুর ভাড়া নিয়ে চলছে পাট জাগ

চাষি আরও জানান, সব পাটচাষির নিজস্ব পুকুর নেই। খাল-বিল, নদী-নালায়ও নেই পানি। আবার কিছু জলাশয় বেদখল হয়েছে। ফলে পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দেওয়া ছাড়া তাদের বিকল্প কোন উপায়ও নেই।


স্থানীয় বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা দামে। এই দরে পাট বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা আবাদ খরচই উঠছে না বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, পাটের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা না গেলে এক সময় পাট আবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। প্রতি বছর আবাদ খরচ বৃদ্ধি পেলেও পাটের দর বৃদ্ধি পাচ্ছে না, এটা দুঃখজনক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর