মেহেরপুরে আলো ছড়াচ্ছে 'উন্মুক্ত পাঠগৃহ'

কুষ্টিয়া, দেশের খবর

এসএম জামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কুষ্টিয়া | 2023-08-30 23:04:49

মেহেরপুর থেকে: বই পড়তে কার না ভালো লাগে? আর সেটি যদি হয় বই পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ কিংবা  উন্মুক্ত কোনো পাঠাগার তবে এর থেকে খুশির খবর আর কি হতে পারে! বইপড়ুয়া মানুষ অনায়াসে পারবে সেখানে গিয়ে বই পড়তে। সর্বসাধারণের জন্য ঠিক তেমনি একটি বইপড়ার পাঠাগার তৈরি করেছে মেহেরপুরের একদল তরুণ-তরুণী।

ইতিহাস-ঐতিহ্য জানতে এবং ভবিষ্যৎ প্রগতির পথ অনুসরণ করতে আমাদের আবশ্যক প্রয়োজনীয় হলো অতীত ও বর্তমান বিষয়ক জ্ঞান অর্জন করা। জ্ঞান অর্জনের জন্য বই পড়া বা লাইব্রেরিতে যাওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আর ঠিক সেই কাজটি করে চলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপ 'মেহেরপুর আড্ডা' নামক একটি সংগঠন।

 

মেহেরপুরে বেড়ে ওঠা কিছু অদম্য মেধাবী যারা প্রথমে মাত্র কয়েক’শ বই নিয়ে ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল মেহেরপুর গড় সংলগ্ন সরকারি মহিলা কলেজের পশ্চিম পাশে আনুষ্ঠানিকভাবে এই 'উন্মুক্ত পাঠগৃহ' নামে লাইব্রেরির যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে লাইব্রেরির চিত্র পালটে গেছে। এখন কয়েক হাজার বই রয়েছে এখানে।

সরেজমিনে লাইব্রেরীতে গিয়ে দেখা যায়, কাঠের তাকে বিভিন্ন ধরনের বই। বেশ কয়েকজন তরুণ-তরুণী বই পড়ায়ও মগ্ন।

বই পড়তে আসা তানিয়া খাতুন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বই পড়তে ভীষণ ভালো লাগে। যখনই সময় পাই এখানে চলে আসি। এখানে বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে। সুন্দর পরিবেশে ইচ্ছেমতো বই পড়তে পারি। বেশ সময় কেটে যায়, খুবই ভালো লাগে। তবে বইয়ের সংখ্যা আরো বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন তিনি।

 

কুষ্টিয়া থেকে আসা বইপ্রেমী শহিদুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বেড়াতে এসেছিলাম মেহেরপুরে। এই লাইব্রেরির কথা শুনেই এখানে আসা। এখানে বই পড়ার পরিবেশটা খুবই চমৎকার। সব ধরনের বই রয়েছে এখানে। আধুনিক লাইব্রেরি বলতে যেটা বোঝায় সেটা পুরোটাই এখানে রয়েছে।

'উন্মুক্ত পাঠগৃহ'র সাধারণ সম্পাদক মো. আমির হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বইয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষিত সম্প্রদায় এবং সমাজের মধ্যে জ্ঞান প্রচার, প্রসার, সংরক্ষণ ও সম্প্রচার করা। তিনি জানান প্রতিদিন শতাধিক শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা এখানে বই পড়তে আসেন। মনীষীদের জীবনী, উপন্যাস ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে এই পাঠাগারে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত এবং বিকাল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। রোববার বন্ধ থাকে এ পাঠাগার এবং শুক্রবারে শিশুদের জন্য বই পড়ার জন্য থাকে আলাদা ব্যবস্থা।

'উন্মুক্ত পাঠগৃহ'র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তছলিমা খাতুন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে 'মেহেরপুরের আড্ডা' নামে একটা গ্রুপ খোলা হয়। এরপর মেহেরপুরের শহীদুল ইসলাম শাহীনের উদ্যোগে আমরা এই পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হই।

 

তিনি বলেন, আমাদের চিন্তা ছিল ছেলেমেয়েদের বেশি করে বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করবো। আমরা আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পৌঁছেছি। এখন আর ছেলেমেয়েদের বলা লাগে না তোমরা আসো বই পড়ো। তারা নিজেরাই স্ব-উদ্যোগে এসে বই পড়ে। আমাদের এই পাঠাগারে আরো বেশি বই বাড়ানোর প্রয়োজন, আমরা সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে করে আরো বেশি বই আমরা ছেলে-মেয়েদের উপহার দিতে পারি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর