রাস্তার ইট তুলে নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা

বান্দরবান, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, বান্দরবান | 2023-08-24 21:30:30

বান্দরবান সদর থানায় বিশ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি রাস্তার ইট তুলে নিয়েছেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জামাল উদ্দীন চৌধুরী। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

ঠিকাদার সূত্রে জানা যায়, বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের লেমুঝিড়ি এলাকায় পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে পাহাড়ের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী খেয়াং সম্প্রদায়ের ছাত্রদের হোস্টেলে যাওয়ার জন্য ২০১৮ সালে ৪০০ মিটার ইটের রাস্তা নির্মাণ করা হয়।

নির্মাণ কাজের একবছর পূর্ণ না হওয়ায় ঠিকাদার এখনো সিকিউরিটি বিল উত্তোলন করতে পারেননি। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা জামাল উদ্দিন চৌধুরী নিজের প্রভাব খাটিয়ে রাস্তাটির সবকটি ইট তুলে নিয়ে গেছেন।

কাজের জামানতের টাকা উত্তোলনের জন্য বুধবার (১৪ আগস্ট) ঠিকাদার রাস্তার ছবি তুলতে গিয়ে দেখেন, রাস্তা থেকে কয়েকজন শ্রমিক ইটগুলো তুলে ফেলছেন। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানেন, জামাল উদ্দিন চৌধুরী রাস্তার ইটগুলো তুলে নিতে শ্রমিকদের কাজে লাগিয়েছেন।

তাৎক্ষণিক বিষয়টি পার্বত্য জেলা পরিষদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ইটগুলো তুলে নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে জামাল উদ্দিন চৌধুরী পলাতক রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

নির্মাণ কাজের ঠিকাদার আব্দুল মোমেন বলেন, ‘একবছর আগে রাস্তাটি নির্মাণ করেছি। এখনো কাজের জামানতের টাকাও উত্তোলন করিনি। জামানতের জন্য বুধবার রাস্তার ছবি তুলতে গিয়ে দেখি রাস্তার ইটগুলো তুলে নেওয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদকে জানিয়েছি, এ বিষয়ে এখন তারা ব্যবস্থা নেবে। কারণ আমরা রাস্তা নির্মাণ করেছি, পরিষদকে কাজও বুঝিয়ে দিয়েছি।’

এদিকে, ইট তোলে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা জামাল উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘আশপাশের জমিগুলো থেকে রাস্তাটি উচুঁ হওয়ায় পাশ্ববর্তী মানুষের জমিতে পানি ঢুকে পড়ছে। সমস্যাটি সমাধানের জন্য আমি রাস্তার ইটগুলো উত্তোলন করতে বলেছি, যাতে রাস্তাটি নিচু করে আবার ইটগুলো বিছিয়ে দেওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘রাস্তাটি নির্মাণের সময় পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ম্রাসা খেয়াং ও ঠিকাদারকে কয়েক বার বলেছি। তারা কেউই আমার কথা শুনেনি। তাই বাধ্য হয়ে নিজেই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ইটগুলো তুলেছি। মাটি কেটে নিচু করে আবার ইট বিছিয়ে দেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ইঞ্জিনিয়াররা। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সদর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর