সাত বছর বয়সী শিশুর নামে চার্জশিট!

মেহেরপুর, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা টোয়েন্টিফোর. কম মেহেরপুর | 2023-08-27 23:35:21

সাত বছর ১১ মাস বয়সী এক শিশুকে অপরাধী করে আদালতে চার্জশিট করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুযায়ী শিশুটিকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করার পর তার জামিন হয়েছে।

শিশুটির নাম সায়েম। তার বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পলাশীপাড়া গ্রামে। পিতা দিনমজুর গিয়াস উদ্দিন। পারিবারিক বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশী মামলাটি দায়ের করেন।

সিয়ামের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ওই মামলায় আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে গাংনী থানা পুলিশের একটি দল। পরদিন তাকে আদালতে সোপর্দ করে। ওইদিন দুপুরে মেহেরপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজা তার জামিন মঞ্জুর করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এ কে এম শফিকুল আলম বলেন, দণ্ডবিধির ৮২ ধারায় ৯ বছর বয়সের কম শিশুর কোন কাজকেই অপরাধী হিসেবে গণ্য করা যাবে না। মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়ার সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা শিশুটিকে বাদ দেওয়ার আবেদন করতে পারতেন। শিশুকে অপরাধী করা খুবই দুঃখজনক।

শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের নভেম্বরে শিশুরা খেলা করার সময় সিয়াম প্রতিবেশী দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে সাথী খাতুনের চোখে বালি ছুড়ে দেয়। এতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে চিকিৎসায় ভালো হলেও সাথী খাতুনের পিতা দেলোয়ার হোসেন মেহেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় সিয়ামের দাদা ইনজাল কারিগরকে। পারিবারিক পূর্ব বিরোধের কারণে ইনজাল কারিগরকে আসামি করা হয় বলে জানান সিয়ামের পরিবার।

এদিকে আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করে গাংনী থানায় রেকর্ড করে পুলিশ। মামলাটি তদন্ত করেন গাংনী থানার তৎকালীন উপ পরিদর্শক (এস আই) বর্তমানে পুলিশ লাইনের আর.আই আশরাফুল ইসলাম। তিনি মামলার ফাইনাল রিপোর্টে সিয়ামের দাদাকে বাদ দিয়ে সিয়ামকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে উপ পরিদর্শক আশরাফুল ইসলামের মোবাইলে কয়েকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জানতে চাইলে গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান বলেন, গাংনী থানায় আমার যোগদানের আগের ঘটনা এটি। তবে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুযায়ী শিশুকে যথানিয়মে তার বাড়ি থেকে নিয়ে এসে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর