গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শুরু হয়েছে চারা রোপণের কাজ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। বিরামহীন গতিতে চলছে চারা রোপণের কাজ।
জানা যায়, এবারে গাইবান্ধা জেলার সবকটি উপজেলায় বন্যার পানি প্লাবিত হয়। এসব উপজেলার মধ্যে সাদুল্লাপুর উপজেলার অধিকাংশ ফসল মাঠ অনেকটাই উঁচু। তাই বন্যার প্রভাব তেমন লাগেনি। তবে উপজেলার নিচু এলাকা পুরাণ লক্ষীপুর ও জয়েনপুর গ্রামসহ আরও কয়েকটি গ্রামে প্লাবিত হয়েছিল। ফলে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা।
সম্প্রতি প্রচন্ড রোধ ও ভ্যাপসা গরমকে উপেক্ষা করে রোপা আমন চারা বুননে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা । তাদের কাঙ্খিত স্বপ্ন পুরণে কাদা মাটিতে চারা বুনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে সাদুল্লাপুর উপজেলার বর্গাচাষিরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বীজচারা সংকট। এসব চারা সংগ্রহে বিভিন্ন হাট-বাজারে ও আদর্শ কৃষকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তারা ।
শনিবার (৩ আগস্ট) সাদুল্লাপুর বাজারস্থ বীজচারা কিনতে আসা কলিম উদ্দিন ব্যাপারি বলেন, আমন চাষাবাদ করার জন্য আমাদের নিজস্ব কোনো জমি নেই। ঘরের চাউলের ভাত খাওয়ার জন্য অন্যের জমি বর্গা নেওয়া হয়। ফলে বীজচারা কিনে জমি রোপণ করতে হচ্ছে। চারাও তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য বছরের তুলনায় এবারে বীজচারার দাম বেশী বলে জানান তিনি।
জামালপুর এলাকার আদর্শ কৃষক হাফিজার রহমান জানান, ইতোমধ্যে চার বিঘা জমিতে আমন চারা রোপণ করেছি। অতিরিক্ত চারাগুলো হাটে গিয়ে বিক্রি করা হয়েছে। প্রতি পোন (২০ গোন্ডা) ৬০০ টাকা দামের বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।
আরেক কৃষক আবু হোসেন মন্ডল আক্ষেপ করে জানান, গেল বোরো মৌসুমে ইরি ধান চালাবাদ করে ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায়নি। অনেক লোকশানের হিসাব গুণতে হয়েছে। ফের আমন চারা রোপণ শুরু করেছি। জানি না ঘুরে দাঁড়াতে পারব কিনা।
সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার খাজানুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, চলতি আমন মৌসুমে ১৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ উপজেলায় বন্যায় আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ১১ একর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এতে করে কৃষকদের বিনামূল্যে চারা বিতরণ করা হবে।