'ত্রাণ চাই না, উজানে বেড়িবাঁধ চাই'

রংপুর, দেশের খবর

আমিনুল ইসলাম জুয়েল, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, পীরগাছা (রংপুর) | 2023-08-29 15:04:13

রংপুরের পীরগাছায় বেড়িবাঁধের অভাবে তিস্তা নদীর ভাঙনে প্রতিবছর বিলীন হচ্ছে দুটি ইউনিয়নের একের পর এক জনপদ। পানি উন্নয়ন বোর্ড উজানে নতুন করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করায় গত পাঁচ বছরে তিস্তার ভাঙনে উপজেলার তাম্বুলপুর ও ছাওলা ইউনিয়নের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সাতটি গ্রামের প্রায় সাত শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এ কারণে প্রতিবছর শত শত পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সহায়-সম্বল ও বসতবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, 'আমরা প্রতিবছর বন্যার সময় ত্রাণ চাই না, তিস্তার বন্যা ও ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে উজানে বেড়িবাঁধ চাই।'

ভাঙনে শেষ সম্বলটুকু নিয়ে অন্যত্র আশ্রয়ের খোঁজে 

 

জানা যায়, দীর্ঘদিন পূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ভেঙে যাওয়া বাঁধটি পুনঃনির্মাণ করে। কিন্তু পাউবো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটির উজানে শিবদেব চর এলাকায় বেড়ি বাঁধ নির্মাণ না করায় ২০০ মিটার বেড়িবাঁধসহ এক কিলোমিটার একটি সড়ক ভেঙে তিস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। শিবদেবচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির দ্বিতল ভবন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি।

চর ছাওলা গ্রামের আফছার আলী(৫২) ও  আবুল হোসেন (৬৪) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'পাউবোর ভুলের কারণে তারা এ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। যদি উজানে একটি বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হতো তাহলে লোকালয়ে নদীর পানি ঢুকতে পারত না, আর ক্ষতিও হতো না।'

চর ছাওলা গ্রামের কাদের আলী ও শিবদেব চর গ্রামের ফজল উদ্দিনসহ আরও অনেকে বলেন, 'আমরা  প্রতিবছর বন্যার সময় ত্রাণ চাই না, তিস্তার ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে উজানে একটি বেড়ি বাঁধ চাই।'

নৌকায় করে শেষ সম্বল্টুকু নিয়ে যাচ্ছেন

 

ছাওলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহ আব্দুল হাকিম বলেন, 'প্রতিবছর বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে ছাওলা ইউনিয়নের শিবদেবচর, চরছাওলা, কামারের হাট, বজরাপাড়া, নয়ারহাট, রামশিং ও রহমতের চরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়। উজানে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হলে নদী ভাঙন ও বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে গ্রামগুলো।'

উপজেলা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, 'তিস্তার ভাঙন রোধে ওই এলাকায় আরও বেশ কয়েকটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। এসব নির্মাণ করা হলে কৃষকেরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।'

রংপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, 'তিস্তার ভাঙন রোধে উজানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি হলেও ঐ এলাকায় পাউবোর কোনো নিজস্ব জমি নেই। এছাড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ পেলে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর