ডিএনসি কর্মকর্তার একগুয়েমি, খেসারত দিলেন যাত্রী

কক্সবাজার, দেশের খবর

মুহিববুল্লাহ মুহিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কক্সবাজার | 2023-08-18 17:35:35

কক্সবাজার বিমানবন্দর হয়ে নিয়মিত যাতায়েত করেন এক্সসিলেন্ট ওয়ার্ল্ড নামে একটি এনজিওর জেনারেল ম্যানেজার সুলতানা রাজিয়া শামীমা। বরাবরের মত সোমবার বেলা ১১টায় নভোএয়ারের একটি ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী সব চেকআপ পারও করেছেন।

হঠাৎ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি) কক্সবাজারের ইন্সপেক্টর আব্দুল মালেক তালুকদারের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার কাছে মাদক রয়েছে বলে জানায়। এক পর্যায়ে টেনে-হিঁচড়ে তাকে খতিব আল-ফুয়াদ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মাদকের কথা বলে তার শরীরে দুইবার এক্স-রে করানো হয়। কিন্তু, কিছুই পাওয়া যায়নি। এক্সরে অবস্থায় তার ছবি তুলতে থাকেন ইন্সপেক্টর মালেক। এরপর সুলতানা রাজিয়া শামীমার কাছে কিছু পাওয়া না গেলে তাকে ছেড়ে দেন ইন্সপেক্টর মলেক। তবে ততক্ষণে তার নির্ধারিত ফ্লাইট ছেড়ে দিয়েছে।

সোমবার (২২ জুলাই) কক্সবাজার বিমানবন্দরের সব চেকিং পার হয়ে বোর্ডিং পাস পাওয়ার পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি) কক্সবাজারের কর্মকর্তাদের হাতে এমন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে সুলতানা রাজিয়াকে।

হয়রানির বিষয়ে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি বলেন, বিমানবন্দরের নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু চেকআপ করে বোর্ডিং পাসও নিয়েছি। হঠাৎ আব্দুল মালেক সাহেব এসে বলেন আপনার বিরুদ্ধে অবৈধ মালামাল বহনের সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। এক পর্যায়ে তারা আমাকে টেনে হিঁচড়ে টমটমে তুলে নিয়ে যান। আল-ফুয়াদ হসপিটালে নিয়ে গিয়ে এক্সরে করার সময় ছবি তুলতে থাকেন। যা আমার জন্য খুবই লজ্জাজনক।

সুলতানা রাজিয়া বলেন, তাদের এ হয়রানির কারণে আমাকে প্লেন মিস করতে হয়েছে। কিন্তু পরের প্লেনের যে খরচও তারা দেয়নি। উল্টো বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলে গেছেন। আমি এখন আতঙ্কে আছি আমার ছবিগুলো বিকৃত করে প্রকাশ করা হয় কিনা!

কক্সবাজার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, চেকআপ শেষ হওয়ার পর শামীমা বোর্ডিং পাসও নিয়েছেন। আসলে বোর্ডিং পাস নিয়ে ফেললে তার দায়িত্ব আমাদের না, এটা নভোএয়ারের দায়িত্বে চলে যায়। কিন্তু কিভাবে তারা যাত্রীকে ডিএনসির কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন; বলতে পারি না। মূলত বোর্ডিং পাস নেওয়ার পর আর কিছু করার থাকে না।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল ফারুক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। কিন্তু বোর্ডিং পাস নেওয়ার পর কিভাবে তাকে সংস্থার লোক নিয়ে যেতে পেরেছে তা আমি জানি না। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডিং পাস নেওয়ার পর কোন যাত্রীকে ছেড়ে ফ্লাইট যেতে পারে না। কিন্তু নভোএয়ার কর্তৃপক্ষ এটা কী করল বুঝতে পারছি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য অধিদফতরের ইন্সপেক্টর আব্দুল মালেক তালুকদার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গেলে মাঝে-মধ্যে ভুল হয়। আমরা তাকে সসম্মানে আবার পৌঁছে দিয়েছি।

এক্সরেতে ছবি তোলার প্রসঙ্গে তুললে তিনি কোন উত্তর দেননি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর