রাস্তায় তাদের রান্না ঘর!

গাইবান্ধা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটুয়েন্টিফোর.কম গাইবান্ধা | 2023-08-27 05:14:42

গাইবান্ধায় বন্যার পানি কমতে শুরু হলেও, কমছে না পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ। এখনো ঘরে ফিরতে পারে নি বানভাসি মানুষ। ফলে গৃহহারা পরিবারের গৃহিনীরা রাস্তার মধ্যে চুলা বসিয়ে রান্নার কাজ করছে।

জানা যায়, চলমান বন্যায় গাইবান্ধা জেলার পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ ১৮০টি আশ্রয় কেন্দ্রে বসবাস করছে। অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গা না পেয়ে বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও বাঁধের উপরে বসবাস করছে।  এসব মানুষ মাথার উপর পলিথিন ও ট্রিপল টাঙ্গিয়ে দিন পার করছেন। আবার অনেকে খোলা আকাশের নিচে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। আকাশের কাল মেঘ জমলেই তাদের মধ্যে ভীতি বিরাজ করে। কারণ একটু বৃষ্টি হলেও তাদের ভিজে যাবে বিছানাপত্র।

 বন্যা কবলিত এসব মানুষের নেই কোনো বাসস্থান। খাবার ও চিকিৎসাসহ নানান কিছুর অভাবে ভুগছেন। কে, খাবার দিবে এমন সন্ধানে তারা ছুটাছুটি করছেন। এসব পরিবারের খেটে খাওয়া মানুষরা কোথাও শ্রম বিক্রি করতে পারছেন না। কারণ চারিদিকে থৈ থৈ পানি। কৃষকের ফসলের মাঠ ডুবে আছে পানির নিচে। ফলে কারো কেনো শ্রমিকের প্রয়োজন হচ্ছে না। এ জন্য দিনমজুর মানুষদের শ্রমের চাহিদা নেই। বন্যায় আশ্রিত মানুষদের মধ্যে অনেকে বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে ভিক্ষবৃত্তি শুরু করেছে। দিন শেষে যেটুকু পায়, সেই টুকু দিয়ে কোনো মতে খেয়ে বেঁচে আছেন। সবমিলে নানাবিধ আহাজারি শুরু হয়েছে।

আশ্রিত বানভাসি লুৎফর রহমান জানান, ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছি। কবে নাগাদ ঘরে ফিরতে পারব তার কোনো অন্ত নেই। টাকা পয়সার অভাবে কোনো মতে জীবন যাপন করছি।

বাচ্ছারাণী সরকার নামের এক বৃদ্ধা বলেন, এবারের বানের পানিতে ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে রয়েছে। আশ্রয় নিয়েছি শহর রক্ষা বাঁধে। সারাদিন ভিক্ষাবৃত্তি করে যা পাই, রাস্তায় চুলা বসিয়ে তা রান্নাবান্না করে খাই।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বন্যা দুর্গত মানুষদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। যা চলমান থাকবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর