দুঃখের মাঝে মাছ ধরায় সুখ!

গাইবান্ধা, দেশের খবর

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর | 2023-09-01 00:00:37

গাইবান্ধা থেকে: গাইবান্ধা জেলার শহরতলীর ডিবি রোড।বন্যার পানিতে থৈ থৈ করছে। একইচিত্র শহরের পিকে বিশ্বাস সড়কেও। গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তার পাশে থাকা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও দায়রা জজের বাসভবন হাঁটুপানির নিচে।

শহরে প্রবেশের প্রধান সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গোটা শহর। এতে যানবাহন নিয়ে চলাচলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারাক্রান্ত হয়েছে শহরতলীর মানুষদের মন। তবে নদী তীরবর্তী চর, চরদীপ ও নিম্নাঞ্চলের মানুষদের দুঃখের সাথে সুখের দোলা দিচ্ছে বানের সাথে আসা মাছ।

বন্যার পানিতে প্লাবিত এলাকাগুলোতে ছোটবড় নানা বয়সী মানুষ দুঃখকে ঝেড়ে ফেলে সুখের জালে মাছ খুঁজছেন। কমবেশি সবাই মাছ ধরায় ব্যস্ত। এই মাছ ধরার ব্যস্ততার উৎসব শহরে ডিবি ও পিকে বিশ্বাস রোড থেকে প্লাবিত গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে অবশ্য নানা ধরনের জালের বিক্রি বেড়েছে।

পিকে বিশ্বাস রোডে হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে জাল দিয়ে মাছ শিকারে ব্যস্ত বৃদ্ধ মুসলিম মিয়া। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে এই বৃদ্ধ বলেন, বানের পানিতে ঘরের চৌকি ডুবে গেছে। খুব কষ্টে রান্নাবান্না করতে হচ্ছে। এখন অন্যকোনো কাজ না থাকায় মাছ শিকার করছি।

বাদিয়াখালী-ত্রিমোহনী রেলপথটির ওপর দিয়ে পানি প্লাবিত হওয়ায় লালমনিরহাট গাইবান্ধা ঢাকা রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঝিক ঝিক করে অবিরাম ছুটে চলা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও থেমে নেই মাছ ধরা।

কেউ কেউ ছোট জাল, ডার্কির ফাঁদ, কারেন্ট জাল, হেঙ্গা দিয়ে মাছ ধরার আনন্দে ভুলে থাকছেন দুঃখ আর দুর্ভোগ। খালবিল ডোবা রাস্তার উপর ও ছোট ছোট নদে বানের পানিতে চলছে মাছের খোঁজ।

ফুলছড়ির উদাখালী ইউনিয়নের আনন্দবাজারের মিজান বলেন, গত তিন দিনে ১০ কেজির বেশি মাছ ধরেছেন। ছোট জাল দিয়ে মাছ শিকার করতে পারায় আনন্দে আত্মহারা ক্ষতিগ্রস্ত এ যুবক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট জাল, হেঙ্গা, ডার্কি ফাঁদ দিয়ে নতুন পানিতে তেলাপিয়া, পুটি, ডারকা, মলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট ছোট দেশি মাছ ধরতে দেখা যায়।

বর্তমানে জেলার সুন্দরগঞ্জ, সদর, সাঘাটা, ফুলছড়ি সাদুল্লাপুর উপজেলার ৩৪ ইউনিয়নের ২৪৯ গ্রামের প্রায় ১ লাখ পরিবারের সাড়ে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য ১৬১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে প্রায় ৬১ হাজার বানভাসি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর