‘ছেলে ধরা’ গুজবে আতঙ্কিত লক্ষ্মীপুরবাসী

, দেশের খবর

হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, লক্ষ্মীপুর | 2023-08-28 21:16:58

‘ছেলে ধরা’ গুজবে লক্ষ্মীপুর জেলাব্যাপী আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অযথা কোনো প্রমাণ ছাড়াই মানসিক ভারসাম্যহীন কয়েকজন গণধোলাইয়েরও শিকার হয়েছে।

গত এক সপ্তাহে ‘ছেলে ধরা’ সন্দেহে প্রায় ৪ জনকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এসবের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় জেলাব্যাপী আতঙ্কে রয়েছে অভিভাবকরা। এতে স্কুল-মাদরাসায় ছেলে-মেয়েদের পাঠাতে চাচ্ছে না তারা।

তবে পুলিশ বলছে, ছেলে ধরা বিষয়টি গুজব। কোথাও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সন্দেহভাজন যাদেরকে আটক করা হয়েছে, তাদের তিনজনই মানসিক ভারসাম্যহীন। পরিকল্পিতভাবে ফেসবুকে এসব গুজব কাহিনী ছড়িয়ে দিয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই এই ‍গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে জেলা পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৬ জুলাই সদর উপজেলার গৌপীনাথপুরে এক যুবক, ৭ জুলাই মাইলের মাথায় এক বৃদ্ধ, ৮ জুলাই দক্ষিণ মজুপুর এলাকায় এক নারী, রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের পাশে এক যুবক ও সবশেষ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে শহরের উত্তর তেমুহনীতে এক যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এরমধ্যে তিনজনই মানসিক ভারসাম্যহীন।

এদিকে এই গুজব নিরসনের জন্য মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতিবিনিময় করেছেন। সভায় ছেলে ধরা সন্দেহে মজুপুর এলাকায় মারধরের শিকার ওই নারী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাকে মারধরের বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন।

মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মাহাতাব উদ্দিন জানান, ‘ছেলে ধরার’ কথা সবাই শুনেছে, কিন্তু কেউ দেখেনি। এর কোনো প্রমাণ মেলেনি। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ‘ছেলে ধরা’ সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করে সাধারণ মানুষ পুলিশে সোপর্দ করেছে। তাদের বেশির ভাগই মানসিক ভারসাম্যহীন। একটি স্বার্থান্বেষী মহল মানুষকে আতঙ্কিত করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়াচ্ছে।

এ গুজবে কান না দিয়ে সন্তানদের নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে গুজবে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, জেলা জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) বিভাগের সহকারী পরিচালক মানিক দে, পুলিশের বিশেষ শাখার ইনচার্জ মো. ইকবাল হোসেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোক্তার হোসেন, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজিজুর রহমান মিয়া, লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেল প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর