সবুজের সমারোহে দোল খাচ্ছে পাট

কুষ্টিয়া, দেশের খবর

এস এম জামাল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কুষ্টিয়া | 2023-08-22 23:18:52

কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে সবুজের সমারোহে দোল খাচ্ছে পাট গাছ। আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এসব পাট কেটে পানিতে জাগ (পচন) দেবে কৃষকরা।

কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের দাবি, আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় এ বছর কুষ্টিয়ায় পাটের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

কুষ্টিয়া পাট অধিদফতরের মুখ্য পরিদর্শক সোহরাব উদ্দিন বিশ্বাস বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান, জেলায় এবার পাটের আবাদ হয়েছে ৩৬ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে দৌলতপুরে ১৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। এছাড়া কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় দুই হাজার ২৫০ হেক্টর, কুমারখালীতে চার হাজার ৬৭৫ হেক্টর, খোকসা উপজেলায় তিন হাজার ৭৪০ হেক্টর, মিরপুরে চার হাজার ৪০ হেক্টর, ভেড়ামারা উপজেলায় তিন হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে।

তিনি বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় সরকারিভাবে একটিমাত্র পাটক্রয় কেন্দ রয়েছে, সেটি হলো খোকসা উপজেলায়। জেলায় যদি আরেকটি ক্রয়কেন্দ্র বাড়ানো যেতো তাহলে কৃষকদের অনেক উপকার হতো। সহজেই সরকারি দরে পাট বিক্রি করতে পারতেন।’

মিরপুর উপজেলার কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘পূর্বে থেকেই যদি পাট বিক্রয়ের নিশ্চয়তা করে বাজারমূল্য নির্ধারণ করত, তাহলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হতো।’

দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া এলাকার কৃষক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘এবার আমি এক একর জমিতে পাটের আবাদ করেছি। পাটগুলো বেশ বাড়ন্ত হয়েছে। তবে পাটের আঁশ বিক্রির সময় কম দাম হলে আমাদের লোকসান গুনতে হয়। তাই সরকারিভাবে যদি পাট বিক্রি করতে পারতাম, তাহলে লাভের পরিমাণটা একটু বাড়ত।’

মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়ন উপ-সহকারী কর্মকর্তা মাহিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবিঘায় পাটচাষ থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত আট থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। পাট ও পাটকাঠি বিক্রি করে মোট ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। তবে যদি পাটের দাম আরও ভালো হয়, তবে কৃষকদের লাভের পরিমাণটাও বেশি হবে।’

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘এ অঞ্চলে পরিত্যক্ত পুকুর জলাশয় কমে যাওয়ায় পাট পচনে বিপাকে পড়তে হয় চাষিদের। পাট পচনে কৃষি-সম্প্রসারণ অধিদফতর প্রদত্ত রিবন-রেটিং পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। যদিওবা কৃষককূলে আসলেও এটি ব্যয়বহুল, ঝামেলাপূর্ণ ও স্বল্প পরিমাণের পচনব্যবস্থা হওয়ায় এ প্রযুক্তিতে আগ্রহী হচ্ছে না কৃষকেরা।’

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘গত বছর আশানুরূপ দাম পাওয়ায় এ অঞ্চলের পাটচাষে নতুন করে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তেমন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর