মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি

পটুয়াখালী, দেশের খবর

আব্দুস সালাম আরিফ, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, পটুয়াখালী | 2023-08-28 13:09:11

দেশের সমুদ্র এলাকায় মৎস্য সম্পদের মজুত বাড়াতে সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার উপর চলছে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। তবে অনেক জেলে ও ট্রলার মালিক এই নিষেধাজ্ঞাকে মানছেন না।

শুক্রবার (৫ জুলাই) সাগরে তিনটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এই সময়ে সকল ধরনের মাছ ধরার ট্রলার অবরোধ পালন করার কথা। তবে কিভাবে এসব জেলেরা সাগরে আইন অমান্য করে মাছ শিকার করছে তা নিয়ে এখন চলেছ নানা ধরনের আলোচনা। এছাড়া এখন শহরে এবং গ্রামের হাট বাজর গুলোতেও মিলছে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ।

২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৫৬ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা পালন করা হচ্ছে, ছবি:বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

মৎস্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই অভিযান সফল করতে জেলেদের সচেতন করার পাশাপাশি নানা ধরনের কর্মসূচী পালন করা হচ্ছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এবারই প্রথম বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৫৬ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা পালন করা হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে ১৫ এপ্রিল থেকে ৬১ দিন এবং চীনে ১৬ মে থেকে ১লা আগস্ট পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা পালন করে থাকে। এই সময়ে দেশের জেলেরা যদি নিষেধাজ্ঞা পালন করে তবে অনেক বেশি সফলতা অর্জিত হবে বলে মনে করেন মৎস্য খাত সংশ্লিষ্টরা।

পটুয়াখালী জেলায় প্রায় ৭০ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে, ছবি:বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের ডিন প্রফেসর লোকমান আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি’র) ১৪ নম্বর গোলে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় ও সামুদ্রিক এলাকায় কমপক্ষে ১০ শতাংশ এলাকা সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। বর্তমানে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকার পরিমাণ ২.১ শতাংশ। সাগরে ৬৫ দিন মাছ শিকারে বাংলাদেশের এক লাখ আঠারো হাজার আটশ তের বর্গ কিলোমিটার এলাকায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে মাছের উৎপাদন এবং বংশ বিস্তার অনেকটা বৃদ্ধি পাবে। 

 মৎস্য বন্দর গুলোতে মৎস্য বিভাগের স্টাফরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন, ছবি:বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, জেলেদের সহযোগীতায় সরকার ইতিমধ্যে জেলে প্রতি ৪০ কেজি করে চাল প্রদান করেছে। এরপরও কিছু কিছু জেলে সাগরে মাছ শিকারে যাচ্ছেন বলে আমরা অভিযোগ পাচ্ছি। এই কর্মসূচীকে সফল করতে সাগরে নৌ বাহিনী এবং কোস্টগার্ড সদস্যরা যেমন অভিযান পরিচালনা করছে, তেমনি মৎস্য বন্দর গুলোতে মৎস্য বিভাগের স্টাফরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে।

পটুয়াখালী জেলায় প্রায় ৭০ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। সাগরে মাছ শিকার বন্ধ থাকায় এই জেলেদের বড় একটি অংশ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছে। তবে প্রথম বারের মত এই কর্মসূচী হওয়ায় আগামী বছর গুলোতে জেলেরা আরও সচেতন হবে এবং আইন মেনে চলবে বলে মনে করেন মৎস্য খাত সংশ্লিষ্টরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর