অচেনাদের আনাগোনায় আতঙ্কে মিন্নির পরিবার

বরগুনা, দেশের খবর

শাহারিয়ার হাসান ও মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 03:35:42

বরগুনা থেকে: মাত্র তিন দিন আগেও স্বামী শাহ নেয়াজ রিফাত শরীফের সঙ্গে আনন্দঘন সময় কাটছিল আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির। কাটবেই বা না কেন! মাত্র দুই মাস আগেই বিয়ে হয়েছিল তাদের। নতুন জীবন শুরু করার উচ্ছ্বাস ছিল তাদের চোখেমুখে।

তবে হঠাৎ মো. সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড নামক ভয়াল ঘাতকের আঘাতে মুহূর্তেই সব স্বপ্ন ভেঙে তছনছ হয়ে যায় মিন্নির। চোখের সামনে স্বামীকে কোপানোর নৃশংস দৃশ্য দেখে এখনো আতঙ্কিত মিন্নি।

রিফাত হত্যার তিন দিন পর নতুন আতঙ্ক বাসা বেঁধেছে মিন্নি ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। এবারের আতঙ্ক সন্ত্রাসী নয়ন বন্ড না হলেও তার সঙ্গী ও সহযোগীরা।

মিন্নির পরিবার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের দিন থেকে অচেনা একদল লোকের আনাগোনা চলছে মিন্নিদের বাড়ির আশপাশে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় অজ্ঞাত একদল লোক মোটরসাইকেলে মিন্নিদের বাড়ির সামনের রাস্তায় আসে। তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে মিন্নি ও তার পরিবারের বিষয়ে নানা কথা জিজ্ঞাসা করে। পরে বাড়ির সামনে পুলিশ দেখে দ্রুত চলে যায়।

মিন্নির পরিবারের অভিযোগ, অচেনা এসব লোকের মধ্যে স্বয়ং নয়ন বন্ড না থাকলেও তারা তার সঙ্গী ও সহযোগী হতে পারে। তারা নয়নের নির্দেশে এখনো মিন্নি ও তার পরিবারের লোকজনের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।

শনিবার (২৯ জুন) মিন্নির বাবা মোজ্জামেল হোসেন কিশোর ও মা জিনাত জাহান মুন্নীর সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা যায়।

মিন্নির বাবা মোজ্জামেল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে। প্রতিনিয়ত নয়নের লোকজন রাতের বেলায় আমাদের বাড়ির সামনে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরা-ফেরা করছে। তারা সুযোগ পেলেই মিন্নি অথবা আমাদের ক্ষতি করবে।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির সামনের রাস্তায় কিছু লোকজন এসেছিল। আমাদের বাড়ির এক মুরব্বিকে তারা জিজ্ঞাসা করে- ‘রিফাতের বউ মিন্নির বাড়ি কোথায়।’ তিনি বয়স্ক হওয়ায় এতো কিছু না বুঝে তাদের বাড়ির রাস্তা দেখিয়ে দেয়।

‘পরে তারা যখন বাড়ির দিকে আসতে শুরু করে তখন দেখে সামনে লোকজন। তখন তারা আবার মুরব্বিকে জিজ্ঞাস করে- ‘বাড়ির সামনে এরা কারা।’ তখন মুরব্বি বলেন, পুলিশ। এই কথা শুনে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়।’

তিনি বলেন, নয়ন ও তার লোকজনের ভয়ে আমরা এখন জিম্মি হয়ে আছি। বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। কখন যে কী হয়ে যায়, সেই ভয়েই থাকি। ছেলে মেয়েদের আর স্কুল কলেজে পাঠাতে পারব কি-না, তাও জানি না। কারণ নয়ন অনেক বড়-ভয়ানক সন্ত্রাসী। তার লোকজন এখনো চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

তবে মিন্নি ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্ক রয়েছে জেলা পুলিশ। মিন্নিদের বাড়ির সামনে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শকের নেতৃত্বে পাঁচজন পুলিশ সদস্য পাহারা দিচ্ছে।

পাহারারত পুলিশের উপ-পরিদর্শদ মো. ইদ্রিস বার্তা২৪.কমকে বলেন, মিন্নি ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আমরা পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত মিন্নিদের বাড়ির সামনে পাহারায় থাকব।

আরও পড়ুন: রিফাতের স্ত্রীর বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন

এ সম্পর্কিত আরও খবর