ডিম পাড়ে হাঁসে, খায় বাগডাশে!

ঝিনাইদহ, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঝিনাইদহ | 2023-09-01 14:57:48

গ্রাম্য ভাষায় প্রচলিত একটি কথা রয়েছে। ডিম পাড়ে হাঁসে, খায় বাগডাশে। যার অর্থ হলো হাঁস কষ্ট করে ডিম পাড়ে আর সেই ডিম খেয়ে যায় বাগডাশে। এমনই দশা হয়েছে ঝিনাইদহের কৃষকদের। কষ্ট করে ধান উৎপাদন করছেন কৃষক আর অস্বাভাবিক মুনাফা লুটছে চাল কল মালিকরা।

জেলায় চলতি মৌসুমে সরকারি খাদ্য গুদামে চাল বিক্রি করে মিল মালিকরা প্রায় ১৫ কোটি টাকার মুনাফা লুটবেন। যার ন্যায্য দাবিদার কৃষক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬শ টাকা থেকে ৭শ টাকা দরে। এক মণ ধানে ২৮ কেজি চাল হয়। এ হিসাবে প্রতি কেজি চালের দাম পড়ে ২৫ টাকা। এর সঙ্গে কেজিতে এক টাকা করে উৎপাদন খরচ যোগ করলে দাম পড়ে ২৬ টাকা। আর সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে সেই চাল বিক্রি করছে ৩৬ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ কেজি প্রতি চালে কল মালিকদের লাভ থাকছে ১০ টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জি এম আব্দুর রউফ জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলায় ৮৮ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। ধান উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩৪৫ টন। হিসাব মতে, চাল উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ২৩০ টন। কিন্তু সরকার এ জেলা থেকে চাল ক্রয় করছেন ১৫ হাজার ৯২৭ টন। জেলার ৪৩০ জন চাল কল মালিকের কাছ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে ক্রয় করছে খাদ্য বিভাগ।

কৃষকরা বলছেন, জেলায় যে পরিমাণ চাল উৎপাদন হয়েছে সে তুলনায় ক্রয় করা হচ্ছে খুবই কম। ধানের দাম কম থাকায় এ বছর জেলায় কৃষক লাভের মুখ দেখতে পারেনি।

শৈলকুপা উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিবিঘায় বোরো ধান আবাদ করতে খরচ হয়েছে সেচে ৪ হাজার, সার ৪ হাজার, নিড়ানিসহ পরিচর্যা ৩ হাজার, ধান কেটে ধরে তুলতে শ্রমিক খরচ ৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধান হয়েছে গড়ে ৩০ মণ। বর্তমান বাজারে সাড়ে ৬শ টাকা থেকে ৭শ টাকা দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। এতে খুব বেশি লাভ হচ্ছে না। কিন্তু লাভ করছেন চাল কল মালিকরা।

কৃষকদের এই লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতে ধানের দাম ও সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ জেলার সচেতন মহলের।

এ সম্পর্কিত আরও খবর