ওরা সেহেরি ফেরিওয়ালা...

মেহেরপুর, দেশের খবর

মাজেদুল হক মানিক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর | 2023-08-21 09:18:44

রোজা পালনের ক্লান্তি শেষে মানুষ যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন কয়েকজন তরুণ-যুবক সেহেরি রান্নায় ব্যস্ত। রান্না হলেই হাসপাতালের এক কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে রোগীর স্বজনদের খোঁজাখুঁজি। এরপর তাদের খাওয়ানো হচ্ছে সেহেরি।

প্রথম রমজান থেকেই রোগীর স্বজনদের বিনা মূল্যে এ সেবা দেওয়ায় সকলের ভালোবাসায় সিক্ত তারা। তাই স্থানীয়রা তাদেরকে ‘সেহেরি ফেরিওয়ালা’ বলে ডাকেন।

স্থানীয় যুবক জাবেদুর রহমান জনির উদ্যোগে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এভাবেই রোগীর স্বজনদের সেহেরি খাওয়ানো হয়। রোগী ভর্তির উপর নির্ভর করে প্রতি রাতে ৫০ থেকে ১২০ জন রোগীর স্বজনকে সেহরি খাওয়ানো হয়।

হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজন কুমারীডাঙ্গা গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে খাবার আসে। সেই খাবার সেহেরি পর্যন্ত ভালো থাকে না। এতে অনেকের সেহেরি খাওয়া হয় না। এই যুবকরা হাসপাতালে সেহেরি দেওয়ায় রোগীর স্বজনরা রোজা রাখতে পারছেন।’

আরেক রোগীর স্বজন হিজলবাড়ীয়া গ্রামের জুই খাতুন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সেহেরির সময় বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসা সম্ভব নয়। এ কারণে অনেকের পক্ষে রোজা রাখা হয়তোবা সম্ভব ছিল না। এখানে সেহেরি দেওয়ায় রোজা নিয়ে চিন্তা নেই।’

সেহেরি উদ্যোক্তা জাবেদুর রহমান জনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘হাসপাতালের রোগীর স্বজনদের জন্য সরকারি খাবার বরাদ্দ থাকে না। তাই সেহেরি খাওয়া নিয়ে কষ্ট করতে হয়। তাদের কষ্ট দূর করতেই সেহেরি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি। কয়েকজন যুবক ও তরুণ এই কাজের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অর্থের জোগান দেন। দুই বছর থেকে এভাবেই চলছে।’

জনির কাজের সঙ্গী নাহিদ আজীম রাব্বি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা বাজার করে একসঙ্গে বাসায় রান্না করি। নিজ হাতে সেই খাবার রোজাদারদের খাওয়ানো ভাগ্যের ব্যাপার বলে মনে করি।’

এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (এমও) ডা. সামসুল আরেফিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘হাসপাতালে সেহেরির খাবার দিচ্ছে কয়েকজন যুবক। এটি ভাবতেই গর্বে বুক ভরে যায়।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর