লক্ষ্মীপুরে পেশাদার ভিক্ষুকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ মানুষ

লক্ষ্মীপুর, দেশের খবর

হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর | 2023-09-01 04:16:19

লক্ষ্মীপুরে পেশাদার ভিক্ষুক কাগজে কলমে রয়েছে ২ হাজার ১২৮ জন। দিন দিন এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ঈদকে কেন্দ্র করে হাট-বাজারে ও বাড়িতে বাড়িতে চলছে মৌসুমি ভিক্ষুকদের দৌরাত্ম্য। তাদের ভিক্ষা চাওয়ার কৌশলে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষজন। এর থেকে রক্ষা পেতে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের দাবি সচেতন মহলের।

রমজানের প্রথম থেকেই মৌসুমি ভিক্ষুকদের আবির্ভাব ঘটেছে জেলা শহরে। নামাজ শেষে প্রত্যেকটি মসজিদের সামনে নানা ভঙ্গিমায় ভিক্ষা চেয়ে আসছে তারা। যেখানেই মানুষের সমাগম সেখানেই তাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

একজনের কাছে তিনজন ভিক্ষা চাঁচছেন, ছবি: বার্তা২৪

জানা গেছে, শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মসজিদের প্রবেশ মুখে সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি থাকে ভিক্ষুকদের। একজনকে টাকা দিতে দিলে আরও ৫জন ভিক্ষুক এসে হাত পাতেন। এ সময় সবাইকে টাকা না দিলে নাজেহাল হতে হয়। ছোট ছোট বাচ্চারা এসে পা-কিংবা হাত ধরে টানা হিঁচড়া করেও ভিক্ষা চেয়ে থাকে। আবার অনেক ভিক্ষুক আছে যাদের দুই-এক টাকা দিলে নেই না। তাদের ডিমান্ড (চাহিদা) আরও থাকে।

বাসা-বাড়ি, হাট-বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর লোক সমাগমস্থল, মসজিদ, মাজার কিংবা ধর্মীয় উপাসনালয়ের সামনেই ভিক্ষুকদের বেশি দেখা যায়। তাদের নিয়ে জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার সবখানেই বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে।

মৌসুমি ভিক্ষুক, ছবি: বার্তা২৪

তবে ভিক্ষুকদের অভিযোগ, সরকার থেকে কোনো রকম সাহায্য তারা পাচ্ছেন না। এজন্য পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে ভিক্ষা করতে হয়। সরকারিভাবে পুনর্বাসন করা হলে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বিরত থাকবে বলেও জানান তারা।

জেলা সমাজ সেবা কার্যালয় সূত্র জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে তালিকাভুক্ত ভিক্ষুক রয়েছে ২ হাজার ১২৮ জন। এরমধ্যে লক্ষ্মীপুর পৌরসভায় ১৩৪, সদর উপজেলায় ১ হাজার ৭৩ জন, রায়পুরে ১২৬, রামগঞ্জ ৪৩২, কমলনগর ১৮৭ ও রামগতি ১৭৬ জন ভিক্ষুকের তালিকা রয়েছে।

রাস্তায় শুয়ে ভিক্ষা করছেন ভিক্ষুক, ছবি: বার্তা২৪

লক্ষ্মীপুর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী বলেন, ‘ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে গত ১০ মার্চ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আট ভিক্ষুক পরিবারকে বিনামূল্যে ৮টি গরু দেওয়া হয়েছে। গরুগুলোর বাজার মূল্য প্রায় দুই লাখ টাকা। এছাড়াও ভিক্ষুকদের একটি তালিকা আমাদের কাছে আছে। ভিক্ষা থেকে সরিয়ে আনার জন্য বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে কর্মসংস্থানসহ তাদেরকে পুনর্বসান করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর