পঞ্চগড়ে দর্জিদের নির্ঘুম রাত কাটে পোশাক তৈরিতে

পঞ্চগড়, দেশের খবর

মোহাম্মদ রনি মিয়াজী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পঞ্চগড় | 2023-09-01 05:46:36

ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন। ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি আর ঈদ মানেই নতুন কিছু পাওয়া। পুরো একটি মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলমানদের মাঝে আনন্দ দিতে হাজির হয় ঈদুল ফিতর। দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে ঈদের আমেজ ততোই বিরাজ করছে মানুষের মাঝে।

ঈদকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে অনেকেই নতুন কাপড় কিনেছেন। অনেকে এখনো কিনছেন তার পছন্দের পোশাকটি। অনেকে আবার কাপড় কিনে দর্জিতে দিয়ে নিজের পছন্দের ডিজাইনে তৈরি করছেন পোশাক। তেমনি ঈদকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়ে জমে উঠেছে কাপড়ের মার্কেটগুলো। পোশাক তৈরির ধুম পড়েছে দর্জির দোকানগুলোতে। ফলে কাজের বাড়তি চাপ দেখা যাচ্ছে কারিগরদের মাঝে। তারা রাত জেগে নিত্য নতুন ডিজাইনের পোশাক তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

পঞ্চগড় শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি দর্জি কারিগর মেশিনে সামনে গভীর রাত পর্যন্ত পোশাক তৈরির কাজ করছেন। ঈদকে ঘিরে অনেক কাজ জমে থাকায় তারা এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করছেন না। কারণ, তাদের কাছে বছরের এ ঈদ হলো একটি কাজের মৌসুম।

পঞ্চগড় বাজারের দর্জিগুলোতে শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, থ্রি-পিছ,পায়জামাসহ বিভিন্ন পোশাক তৈরি করা হয়৷ এর মধ্যে শার্টের সেলাই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, প্যান্ট ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৩৮০ থেকে ৪৫০টাকা এবং থ্রি-পিছ ২৬০ থেকে ৩৬০ টাকা করে নিতে দেখা যায়।

পঞ্চগড় শহরের ফপস টেইলার্সের কাটিং মার্স্টার আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর রোজার প্রথম থেকে অর্ডার নেওয়া শুরু হয়েছে। এ ঈদ আমাদের কাজের মৌসুম, তাই রাত জেগে জীবিকার তাগিদে কাজ করি আমরা।’

জেলার ভজনপুর বাজারের পোশাক তৈরির কারিগর ইয়ানুর ইসা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রমজান মাস আসলেই আমাদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। আমরা পোশাক তৈরির উপর কমিশন ভিত্তিক বেতন পাই। তাই ঈদের সামনে বেশি কাজ করি। একদিকে কাজের চাপ অন্যদিকে বাড়তি আয়ের জন্য রাত জেগে পোশাক তৈরি করি।’

একই কথা জানালেন, ভজনপুর মর্ডান টেইলার্সের কারিগর হিজল। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘পোশাক তৈরি করে চলে আমাদের সংসার। কষ্ট হলেও কাজ করতে হয় আমাদের। সকল ৯টা থেকে সেহরি (সাড়ে ৩টা) পর্যন্ত কাজ করি আমরা। ঘুম অনেক কম হয় এ মাসে। কারণ, সময় মতো গ্রাহককে তৈরি পোষাকটি ডেলিভারি দিতে হবে।’

এদিকে, পঞ্চগড় মহিলা কলেজের ছাত্রী রুম্পা আক্তার বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এবার ঈদে নতুন থ্রি পিছ নিয়েছি এবং তাই থ্রি -পিছ সেলাই করতে এসেছি তবে সেলাই দাম তুলনামূলক অনেক বেশি সব টেইলার্সেই।’

এ বিষয়ে হিরো টেইলার্সের কাটিং মাস্টার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘ঈদ ঘিরে কাজের খুব চাপ আর কর্মচারীরা বাড়তি কাজ করে। আমরা সেলাই খরচ বেশি নেই না তবে কর্মচারীদের বেতন বেশি ও বোনাস দিতে হয় তাই আমরা সবার কাছে চেয়ে নেই। তবে তা অতিরিক্ত না।’

তেঁতুলিয়া উপজেলা দোকান পাট ব্যবসায়ী বনিক সমিতির (ভজনপুর) সভাপতি আলমগীর হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘পুরো রমজান মাসে দর্জির দোকানগুলো রাতভর খোলা থাকে। নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সমিতি থেকে সব এলাকায় নাইট গার্ড নিয়োগ দিয়েছি।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর