পাঁচ লাখ মানুষের জন্য তিন চিকিৎসক!

বরগুনা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা | 2023-08-15 19:41:03

বরগুনার তালতলী ও আমতলী উপজেলার পাঁচ লাখ মানুষের বসবাস। আর তাদের স্বাস্থ্য সেবায় ডাক্তার আছেন মাত্র তিনজন। তাদের মধ্যে- আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ জন এবং তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য সেবা। ফলে ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের। কারণ চিকিৎসার জন্য সবাইকে শহরের হাসপাতালে যেতে হয়।

জানা গেছে, এই দুই উপজেলায় ৩৯ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও ৩৫টি পদ খালি। যার মধ্যে তিনটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য অ্যান্ড হেলথ ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসকই নেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আমতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১ জন চিকিৎসকের মধ্যে আছেন মাত্র ৫ জন। তাদের মধ্যে ডা. মোনায়েম সাদ প্রেষণে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, শাকিলা আক্তার মাতৃত্বকালীন ছুটিতে, ইমদাদুল হক চৌধুরী টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রেষণে, টিএইচ শংকর প্রসাদ অধিকারী দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ছুটিতে আছেন। আর বাকি দুজন ডা. মো. শাহদাত হোসেন ও ডা. জিকু শীল কর্মরত আছেন। আর তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও শুধু মো. মেছবাহ উল ইসলাম চৌধুরী কর্মরত আছেন।

এছাড়া কুকুয়া ১০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ জন চিকিৎসকের পদই খালি। আর গুলিশাখালী, গাজীপুর ও তালতলী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য অ্যান্ড হেলথ ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক নেই।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে বর্হিবিভাগে দুইশজন এবং আন্তঃবিভাগে গড়ে ৫৫-৬০ জন রোগী আসেন। কিন্তু একজন চিকিৎসককেই সব রোগীর চিকিৎসা দিতে হয়, যা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ট্রমা সেন্টার ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালে শত শত রোগীর ভিড়। কিন্তু চিকিৎসকদের কক্ষ তালাবদ্ধ। রোগী ও তার স্বজনরা হাসপাতালের মেঝেতে পায়চারি করছেন। অনেক মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

গাজীপুর এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মিঠুর সরকার দায়িত্বে থাকলেও তিনি শুধু বৃহস্পতিবার আসেন। বাকি দিনগুলোতে কেন্দ্র বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অনেক রোগী চিকিৎসক না পেয়ে চলে যান।’

গাজীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মিঠুন সরকার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেষণে আনা হয়েছে। ফলে আমি সপ্তাহে একদিনের বেশি কেন্দ্রে যেতে পারি না।’

তালতলীর গাবতলী গ্রামের মো. আবদুল মাজেদ মাস্টার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘সামান্য অসুখ হলেই সবাইকে শহরে যেতে হয়। ফলে রোগীদের ভোগান্তি যেমন বাড়ে তেমনি আর্থিক ক্ষতিও হয়।’

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘চিকিৎসক চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া না হলে স্বাস্থ্য সেবা অব্যাহত রাখা কষ্টকর।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর