অভাবকে জয় করা মধু বেগমের গল্প

ঝিনাইদহ, দেশের খবর

সোহাগ আলী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঝিনাইদহ | 2023-08-31 12:38:07

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের ভূপতিপুর গ্রামের বাসিন্দা মধু বেগম। বয়স পঞ্চাশের কোটায়। নিজের এক খণ্ড জমিতে খামার গড়ে তুলে অভাবকে জয় করেছেন তিনি। এখন সন্তান-পরিবার নিয়ে সুখেই দিন কাটছে তার। তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে এলাকার অনেকেই খামার তৈরিতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

জানা যায়, অভাব অনটনের সংসারে ১৯৮৮ সালে স্বামী বেলাল মিয়ার সঙ্গে ১০ কাঠা জমিতে ফলজ ও বনজ বৃক্ষের নার্সারি গড়ে তোলেন মধু বেগম। ওই জমিটুকু ছাড়া আর কোনো সম্পদ ছিল না তাদের। নার্সারির চারা বিক্রি করে সংসার চালাত বেলাল মিয়া। এক ছেলে, তিন মেয়ে নিয়ে ছিল তাদের সংসার। নার্সারির চারা বিক্রি আর অন্যের জমিতে কাজ করে কোনো মতে দিন কাটছিল তাদের।

এরপর ২০০৩ সালে মারা যান বেলাল মিয়া। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে একা হয়ে পড়েন মধু বেগম। উপায় না পেয়ে সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে হাল ধরেন নার্সারির। অন্য গাছের সঙ্গে পেঁপের চারা উৎপাদন করেন। ১১ শতক জমিতে উৎপাদিত পেঁপের চারা বিক্রি করেন। এভাবে টানা কয়েক বছর লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করেন তিনি।

এরপর জমানো টাকা দিয়ে বাড়ির পাশে ৪০ শতক জমি ক্রয় করেন। সেখানে পুকুর কেটে শুরু করেন মাছ চাষ। এখন বছরে কয়েকদফায় বিক্রি করেন মাছ।

এছাড়াও বাড়িতে গড়ে তুলেছেন ফার্ম। সংসারে সচ্ছলতা আসার পর মধু বেগম শুরু করেন কেঁচো সার উৎপাদন। সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বাড়ির পাশে একটি ঘর বানিয়ে সেখানে কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেন তিনি। প্রতি মাসে ৩শ কেজি কেঁচো সার উৎপাদিত হয় তার খামারে। আর তা বিক্রি করে পাচ্ছেন প্রায় ১৫ হাজার টাকা।

মধু বেগম বলেন, ‘জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। এখন আর কষ্ট নেই। এই বাড়ির ক্ষুদ্র খামারের আয় থেকে আমার পরিবারের সকল খরচ চলে। খামারে কোনো সমস্যা হলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি অফিস সহযোগিতা করে।’

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোফাকখারুল ইসলাম জানান, জীবন সংগ্রামে জয়ী মধু বেগম। তার খামার ও ফার্মের জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর