ফণীর প্রভাবে মেহেরপুরে বেড়েছে বাতাসের বেগ

মেহেরপুর, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, মেহেরপুর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 15:47:01

ওড়িশা ব্যাপক তাণ্ডবের পর কোলকাতার দিয়ে বাংলাদেশে ধেয়ে আসছে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ফণী। এতে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী মেহেরপুর জেলার মানুষের মাঝে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন বিদ্যালয়ের খোলা অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে।

শুক্রবার (৩ মে) ভোর থেকে মেহেরপু জেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। বিকেলে শুরু হয় মাঝারি ধরনের বৃষ্টি। বাড়তে থাকে বাতাসের গতিবেগ। রাত এগারটার পড়ে ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়। যা চলমান রয়েছে।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আতাউল গনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে ফণী এগিয়ে আসলে আমাদের ঝুঁকি থেকেই যায়। সম্ভাব্য ক্ষতির বিষয়টি চিন্তা করে আমরা স্কুল ও কলেজের পাকা ভবনে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দিয়েছি। কাঁচা ও আধাপাকা বাড়ির লোকজন অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে রাত্রিযাপন করছেন।’

এদিকে, ঝড়ো হাওয়ার কারণে জেলার বেশিরভাগ গ্রাম বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। বৈদ্যুতিক লাইনের তারের উপর গাছের ডালপালা ও বাঁশ পড়ে থাকায় লাইন চালু করা যাচ্ছে না বলে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে নিশ্চিত করা হয়।

এর আগে গেল ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলা ও মেহেরপুরের মুজিবনগর ও চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার উপর থেকে প্রবাহিত হয় প্রচণ্ড বাতাস। এতে কাঁচা ও আধাপাকা বাড়িঘর ভেঙে কয়েকজন আহত হন। বড় বড় গাছপালা ভেঙে পড়ে। ব্যাপক ক্ষতি হয় বোরো ধানের। তাই ঘূর্ণিঝড় ফণী আসার খবরে মুজিবনগর উপজেলার মানুষ এবার বেশি সতর্ক। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের আহ্বানে অনেকই বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

কেগারগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া ইদ্রিস আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমাদের গ্রামে কয়েকজনের ছাড়া বাকি সবার পাকা বাড়ি। ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি ভেঙে পড়তে পারে, তাই সপরিবারে বিদ্যালয়ে এসে উঠেছি।’

আতঙ্কিত না হয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ, পুলিশ, হাসপাতাল ও জেলা উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে তদারকি কমিটি গঠন করা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম।

আবহাওয়া অফিসের সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারে মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় ফণী কিছুটা দুর্বল হয়ে ভারতের উপকূলীয় ওড়িশায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার সকালের মধ্যে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। ফণীর প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে এবং দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারে মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর