কেন গরমে কম্বল দিলেন ইউএনও?

কুষ্টিয়া, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট কুষ্টিয়া বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 23:42:13

'হ্যাঁ, আমিই সেই ইউএনও, আমি তীব্র গরমে আগুনে পুড়ে সর্বস্ব হারানো পরিবারকে সাহায্য হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে কম্বল বিতরণ করে মহা অপরাধ করেছি।’

এ কথাগুলো অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে কম্বল বিতরণ করে সমালোচনার মুখে পড়া কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর।

তিনি তার নিজের ফেসবুক পেজে তীব্র গরমে কেন কম্বল বিতরণ করলেন তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ফেসবুক স্ট্যাটাসে ইউএনও লেখেন, 'ঘটনাটি যেদিন ঘটে ওইদিনই ফেসবুকের মাধ্যমে আমি তা জানতে পারি, কালক্ষেপণ না করে ছুটে যাই ক্ষতিগ্রস্তের বাড়িতে, গিয়ে দেখি পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। আমি তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কয়েকটি কম্বল দেই যাতে অন্তত রাতে এটা বিছিয়ে শুতে পারে। এছাড়া নতুন ঘর তৈরি করার জন্য সহযোগিতার আশ্বাস দেই।'

'তখন আমার মাথায় ছিল কীভাবে দ্রুত এদের পুনর্বাসন করা যায়। দিনটি ছিল শনিবার। যার কারণে অন্য কোনো সরকারি সাহায্য (যেমন টিন, নগদ টাকা) দেয়া ওই মুহূর্তে সম্ভব ছিল না এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে তাদের সহযোগিতার পরামর্শ দেই।'

ইউএনও আরও জানান, 'পরিস্থিতি আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে ফোনে ও লিখিতভাবে অবহিত করি। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সহযোগিতায় তাদের নতুন ঘর তৈরি করার জন্য ৪ বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ১২ হাজার টাকা প্রদান করা হয় এবং উপজেলা থেকে তাদের স্কুল পড়ুয়া ২টি সন্তানকে শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়।’

'একজন সরকারি কর্মচারী হিসেবে যতটুকু আইনের মধ্য থেকে করা যায় আমরা তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। তাদের ওই অবস্থা দেখে মনে হয়েছিল অন্তত তারা এই মুহূর্তে কিছু পাক।’

অপরদিকে, আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারগুলোকে তাৎক্ষণিকভাবে নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়ায় ইউএনও’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর গ্রামের দিনমজুর জাকিরুল ইউএনও'র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে আমার বাড়িঘর সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমার পরিবারের সদস্যদের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই ছিল না। ইউএনও আমার এই পোড়া ঘরবাড়ি পরিদর্শন করে কয়েকদিনের মধ্যেই মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছে। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার কুষ্টিয়ার হরিপুরে অগ্নিকাণ্ডে দিনমজুর জাকিরুলসহ দুটি পরিবারের সদস্যদের সবকিছু পুড়ে যায়। এদিন ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন ওই ইউএনও। এরপরই তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর