ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বে বন্ধ ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ

ঝিনাইদহ, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, ঝিনাইদহ, বার্তা২৪ | 2023-09-01 08:53:59

 

আন্দোলনের নেতৃত্ব দ্বন্দ্বে ১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ। এতে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। সেশনজটসহ  নানা সমস্যায় পড়বে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, ঝিনাইদহ শহর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের পাশে হলিধানি এলাকাতে দুটি প্রকল্পের আওতায় প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় কলেজটি স্থাপন করে। ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ভর্তি করে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে কর্মকর্তাদের ডেপুটেশনে এখানে পাঠানো হয়। ডেপুটেশনে আসা ১৯ জন কর্মকর্তা পাঠদান ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সে সময় স্থানীয় ৬ জনকে অতিথি শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্রকল্প থেকে তাদের বেতনভাতাদি প্রদান করা হতো। ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এরপর থেকে তারা বেতন পাচ্ছেন না।

কলেজটি শুরুর পর থেকেই ছাত্র আন্দোলনের মুখে পড়ে। প্রথমে তারা কলেজটিকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরে তারা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজটিকে পৃথক ফ্যাকাল্টি করার দাবি করে। এই নিয়ে তারা বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ কর্মসুচিও পালন করেন।

গত ফেব্রয়ারিতে তারা আন্দোলন জোরদার করলে মূল আন্দোলনের দাবির সাথে আরও কয়েকটি দাবি যুক্ত করে। প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের তালা ঝুলিয়ে কলেজটি অচল করে দেয়। শিক্ষকদের মাঝে ভয়ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্ররা দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একপক্ষের নেতৃত্ব নেয় ছাত্রলীগ নেতা লুবান মাহমুদ মিশুক ও অন্যপক্ষের নেতৃত্ব দেন ফাহিম হোসেন।

কলেজটি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে করার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয় ছাত্রলীগের মধ্যে বিরোধ। ঘটে সংঘর্ষের ঘটনা। এতে আহত হয় প্রায় ১০ জন ছাত্র।

অবশেষে কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের সাথে পরামর্শ করে ১ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করে কলেজ।

আর এতে বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। সোহাগ তালুকদার নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দীর্ঘ ১ মাস যাবত কলেজটি বন্ধ রয়েছে। যে কারণে ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। এতে আমাদের সেশনজটসহ নানা সমস্যায় পড়তে হবে। তিনি দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করে কলেজটি চালু করার দাবি জানান।’

ওবাইদুল্লাহ নামের অপর আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বের কারণে আমাদের মত সাধারণ শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে আছে। ক্লাস হচ্ছে না, পরীক্ষা হচ্ছে না। পিছিয়ে পড়ছি আমরা। তাই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।’

এ ব্যাপারে কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. অমলেন্দু কুন্ডু জানান, ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মারামারির ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। বিবাদমান দু’পক্ষের এক টেবিলে আনা যাচ্ছে না। তবে আশা করছি দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করে কলেজটি চালু করা যাবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর