আবহাওয়া সংকেত সম্পর্কে ধারণা কম উপকূলবাসীর

বরগুনা, দেশের খবর

ইমরান হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বরগুনা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 03:49:08

আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত সম্পর্কে ভ্রান্ত ও অস্পষ্ট ধারণা উপকূলে দুর্যোগের সময় ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। আবার নদী ও সমুদ্র বন্দর কেন্দ্রিক দ্বিমুখি সংকেত দেওয়ায় বিভ্রান্তি বেড়েছে উপকূলবাসীর মধ্যে। সংকেত প্রদর্শনে পরিবর্তন আনায় নতুন করে সর্ব মহলে প্রশিক্ষণের তাগিদ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

পতাকা প্রদর্শন করে উপকূলবাসীকে সতর্ক করতে আবহাওয়ার সতর্ক সংকেতে এ বছর আনা হয়েছে পরিবর্তন। আগে যেখানে সমুদ্রে ঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিলেই একটি পতাকা উড়িয়ে ১ নম্বর সংকেত বোঝানো হতো, এখন সেখানে ঝড় সৃষ্টি হয়ে তা বন্দরের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে একটি পতাকা উড়িয়ে ৪ নম্বর সংকেত বোঝানো হয়।

আবার ৩ নম্বর সংকেতেই আগে দু’টি পতাকা উঠতো, আর এখন ৫ থেকে ৭ নম্বর সংকেতে উঠবে দুইটি পতাকা। আর ৭ নম্বরে নয়, এখন তিনটি পতাকা উঠবে ৮ থেকে ১০ নম্বর সংকেতে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/23/1553307758844.jpg

সমুদ্র বন্দরে ১১টি ও নদী বন্দরে চারটি সংকেতের মাধ্যমে আবহাওয়ার সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়।

দেশের দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা তালিকার অন্যতম বরগুনা। শহর কিংবা গ্রাম, এখানকার কোনো এলাকার শতকরা ৯৯ শতাংশ মানুষেরই ধারণা নেই, আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত প্রদর্শনে কখন কতটি পতাকা উত্তোলন করা হয়।

প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডরে বিপর্যস্ত নলটোনা ইউনিয়নের মামুন মিয়া, ডলার মাহমুদ, মো. শাহজাহান, সুফিয়া বেগম, গোল ভানুসহ একাধিক এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে বার্তা২৪.কমকে তারা বলেন, এমনিতেই সঠিক সময়ে আবহাওয়ার সংকেত পাওয়া যায় না। তারপর আবার এখন সংকেতের পরিবর্তন আনায় সব থেকে বড় সমস্যায় পড়েছেন তারা। কোনো ধারণাই নেই বর্তমান আবহাওয়া সংকেত সম্পর্কে।

সংকেতের পরিবর্তনে কঠিন বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুত কর্মসূচির (সিপিপি) বরগুনার দল প্রধান জাকির হোসেন মিরাজ। বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, উপকূলের বেশির ভাগ মানুষ দরিদ্র ও হতদরিদ্র। তাই তাদের বসত ঘরগুলোও থাকে নাজুক। তাই ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয় ব্যাপক। তারপর আবার আবহাওয়ার সংকেতে পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এ বিষয়ে বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন মনোয়ার বার্তা২৪.কমকে বলেন, দেশে বর্তমানে ৩৫টি আবহাওয়া ষ্টেশন থাকলেও, দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা বরগুনায় কোনো আবহাওয়া স্টেশন নেই। সময়মতো আবহাওয়ার সঠিক পূর্বাভাসই পারে দুর্যোগের সময় উপকূলবাসীর জনজীবন ও সম্পদের সুরক্ষা করতে। আর সেজন্য দরকার এ জেলায় একটি আবহাওয়া ষ্টেশন ও দুর্গম এলাকার মানুষকে আবহাওয়ার সতর্ক বার্তা সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।

তবে জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে উপকূলে আবহাওয়ার সতর্কতা সংকেত বোঝানো ও সচেতনতা কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর