টেকনাফে জমে উঠছে তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর লড়াই

কক্সবাজার, দেশের খবর

নূরুল হক, উপজেলা করেসপেন্টেডেন্ট, টেকনাফ, বার্তা ২৪. কম | 2023-08-21 02:11:23

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সীমান্ত শহর টেকনাফে জমে উঠছে তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর লড়াই। চলছে জোর প্রচার প্রচারণা। আগামী ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে এ উপজেলা নির্বাচন।

নির্বাচনকে সামনে রেখে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ছুটছেন। অলিগলিতে প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে। স্ব স্ব প্রার্থীর পক্ষে মাইকিং, নাচ ও গানের মধ্য দিয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন দলের নেতা ও কর্মীরা। তবে সাধারণ ভোটাররা সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করছেন।

গত ৮ মার্চ থেকে প্রচারণা শুরু হলেও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু থাকবে বলে এমনটি আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশের সর্বদক্ষিণে মিয়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা উপজেলা টেকনাফ। এটি সম্ভাবনাময় একটি পর্যটন নগরী, দেশের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে এ উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৮০৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭২ হাজার ৬৫৭ জন এবং মহিলা ভোটার ৭৩ হাজার ১৫১ জন।

এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনজনই আওয়ামী লীগ। ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুরুষ ৮ জন এবং মহিলা পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত সাবেক সাংসদ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহম্মদ (আনারস), অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী দীর্ঘ সময়ের ছাত্রলীগ সভাপতি, বর্তমান যুবলীগের সভাপতি নুরুল আলম (মোটর সাইকেল)। তবে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেননা। প্রার্থীরা নিজেদের শক্তি প্রদর্শন ও জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে, উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগেও দেখা দিয়েছে বিভক্তি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নূরুল বশরের নেতৃত্বে একটি বিশাল অংশ, উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এককভাবে নুরুল আলমের পক্ষে কাজ করছেন।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মদ আলীর পক্ষে দলের অপর একটি অংশ কাজ করছেন। তার বাড়ি হ্নীলা ইউনিয়নে। পার্শ্ববর্তী হোয়াইক্যং ইউনিয়নসহ দুই ইউনিয়নে ভোটারদের ওপর তার আস্থা। দলীয় প্রতীক পাওয়াতে পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলো থেকেও ভোট প্রত্যাশা করছেন তিনি।

অপর দিকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল আলম সদরের সাবেক চেয়ারম্যান, সেখানে তার ভোট ব্যাংক রয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নূরুল হোসেন সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। তার ইউনিয়নে সবার থেকে ভোট বেশি। এতে ভোটার রয়েছে ৩০ হাজার। সে যুবলীগ সভাপতি নুরুল আলমের পক্ষে মাঠে কোমর বেধে কাজ করছেন। উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের প্রার্থীর পক্ষে কোমর বেঁধে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে মোটর সাইকেল প্রতীকের জন্য ভোট চাইছেন। এর ফলে দিনে দিনে গ্রামে গঞ্জে মোটর সাইকেল প্রতীকের ভোটের পাল্লা ভারি হচ্ছে বলে এমনটি জানা গেছে।

আরেক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফর আহম্মদের নিজ এলাকাও সদরে। চেয়ারম্যান পদে জাফর আহাম্মদ নির্বাচন করছেন আনারস প্রতীকে। স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর বাড়ি সদরে হওয়ায় এ ইউনিয়নে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। একই অবস্থা পাশের আরেক ইউনিয়ন বাহারছড়ায়ও।

এদিকে, অন্যান্য দলের ভোটারদের সমর্থন আদায়ে স্ব স্ব প্রার্থীরা জোর চেষ্টা ও লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। এ সব ভোটাররা কোন দিকে মোড় নিচ্ছে তা এখন দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে টেকনাফ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর লড়াইয়ের কথা বলছেন সাধারণ ভোটাররা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর