বকেয়া তিন কোটি টাকা, বন্ধ হচ্ছে না গ্যাস বিক্রি

টাঙ্গাইল, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, টাঙ্গাইল, বার্তা২৪ | 2023-08-24 17:40:23

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ‘মা সিএনজি স্টেশন’র কাছে জামানত ও বিলের প্রায় তিন কোটি টাকা তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ পায়। কিন্তু সেই অর্থ বকেয়া রেখেই গ্যাস বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে সিএনজি স্টেশনের মালিকের বিরুদ্ধে।

আর এ কাজে সহযোগিতা করছে তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিভিউশন অফিসের কতিপয় কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, মির্জাপুর পৌরসভার বাওয়ার কুমারজানি গ্রামের মো. ইব্রাহীম মিয়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস এলাকায় বাওয়ার কুমারজানি মৌজায় মা সিএনজি নামে একটি সিএনজি স্টেশন স্থাপন করেন। ২০০৮ সালে স্টেশনটির অনুমোদনের জন্য ৪৮ লাখ ৮১ হাজার ৩৫৫ টাকা জামানত হিসেবে জমা দিলে ওই বছরই অনুমোদন পান। এরপর থেকে স্টেশনটিতে গ্যাস বিক্রি শুরু হয়।

পরবর্তীতে সরকার কয়েক দফায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি জামানতের টাকাও বৃদ্ধি করে। সে হিসেবে স্টেশনটিতে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট জামানত দাঁড়ায় ২ কোটি ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৮ শ টাকা। এর মধ্যে জামানত জমা দেন ৫১ লাখ ৮৯ হাজার ৫৬০ টাকা। বিপুল অংকের জামানতের টাকা বকেয়া থাকার পরও তিতাস গ্যাসের কতিপয় কর্মকর্তার সহযোগিতায় স্টেশনটিতে গ্যাস বিক্রি অব্যাহত থাকে। স্টেশনটির চলতি সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের ১ কোটি ২১ লাখ ৮৩ হাজার ৭২৩ টাকা বকেয়া রয়েছে বলে তিতাস গ্যাস টাঙ্গাইল অফিস সূত্রে জানা গেছে।

তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জামানত ও বকেয়া বিলের টাকা পরিশোধের জন্য স্টেশন মালিককে লিখিতভাবে জানালেও মালিক ইব্রাহীম মিয়া তা গুরুত্ব না দিয়ে গ্যাস বিক্রি অব্যাহত রাখেন।

টাঙ্গাইল তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৫ সালে প্রথম দফায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেলে প্রতিষ্ঠানটি জামানত বৃদ্ধি পেয়ে বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ১১ লাখ ১৭ হাজার ৪২৮ টাকা। ওই টাকা পরিশোধের জন্য ২০১৫ সালে লিখিতভাবে তাদের জানানো হয়। কিন্তু মা সিএনজি স্টেশনের মালিক জামানতের টাকা পরিশোধ করেননি এবং লিখিতভাবে কোনো সময়ও প্রার্থনা করেননি।

পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় ২০১৮ সালে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেলে প্রতিষ্ঠানটির জামানতের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ কোটি ৮ লাখ ৮৯ হাজার ৯ শ টাকা। এ ছাড়া জেনারেটরের জামানত হিসেবে ৭ লাখ ৯৪ হাজার ৯ শ টাকা নির্ধারণ থাকলেও তিনি ৩ লাখ ৮ হাজার ২০৬ টাকা জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জামানত ও দুই মাসের বকেয়া বিল বাবদ প্রতিষ্ঠানটির কাছে তিতাস গ্যাস টাঙ্গাইল অফিস ২ কোটি ৮৬ লাখ ৭৪ হাজার ৯৬৩ টাকা পাওনা রয়েছে। দুই দফায় বৃদ্ধি পাওয়া জামানত ও বিলের বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া রেখেই নির্বিঘ্নে স্টেশন থেকে গ্যাস বিক্রি করছেন মালিক ইব্রাহীম মিয়া।
মা সিএনজি স্টেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইব্রাহীম মিয়া জানান, সম্প্রতি বকেয়া বিলের ৬০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। জামানতের টাকার বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের অন্য দশটি সিএনজি স্টেশন যেভাবে চলছে আমারটাও সেভাবেই চলছে।

তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন গাজীপুরের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর কামরুল হাসান জানান, সবেমাত্র ক'দিন আগে যোগদান করেছি। তবে স্টেশনের বকেয়া রেখে সংযোগ থাকার কথা নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর