গরিবের সেলুন!

নড়াইল, দেশের খবর

শরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, নড়াইল | 2023-08-31 14:51:33

এক সময় হাটবাজারে গিয়ে টুল বা চৌকিতে বসে চুল কাটানো হতো। যা এখন এসি-ননএসি বড় বড় শপিং মলগুলোতে চলে গেছে। একজন প্রতিদিন হাজার টাকা আয় করছেন অপরদিকে একই কাজ করে আমরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। কথাগুলো বলছিলেন সম্ভুনাথ শীল।

জানা গেছে, নড়াইল জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে ফুটপাতে চুল-দাড়ি কেটে সংসার চালাতেন কয়েক হাজার শীল (নাপিত) সম্প্রদায়ের মানুষ। এখন আর তেমন কেউ নতুন করে এ পেশায় আসছে না বিশেষ করে যারা নিম্ন আয়ের মানুষ। বেছে নিচ্ছে ভিন্ন পেশা। যাদের অর্থ-বিত্ত আছে তারা শহরের শপিং মলগুলো বড় বড় সেলুন করছে।

সদর উপজেলার বাহিরগ্রাম উত্তম শীল বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর যাবৎ বিভিন্ন হাট বাজারে গিয়ে চুল ও দাড়ি কাটে যা উপর্জন হয় তাই দিয়েই সংসার চলায় কোনো রকম।

সম্ভুনাথ শীল বলেন, বর্তমান বাজারের দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে চলতে পারছিনা। ১৫০ থেকে ২০০ টাকার কাজ করে  নূন আনতে পান্থা ফুরায় অবস্থা। বয়সের শেষ সময়ে চলে এসেছি অন্য কোন কাজও করতে পারিনা। তাই বাধ্য হয়ে হাটে-বাজারে ঘুরতে থাকি চুল কাটার জন্য।

বিছালী গ্রামের অরবিন্দ শীল বলেন, ৪৭ বছর আগে থেকে দুই আনায় চুলকাটা শুরু করেছিলাম এখন ২০ টাকা করে  চুল কাটছি।

তিনি আরও বলেন, মানুষ সৌখিন হয়ে গেছে এখন আর এভাবে নিচেই বসে চুল কাটাতে চাই না। তারা এসি সেলুনে চেয়ারে বসে চুল কাটায় সেভ করে। দিন দিন আমাদের আয় কমে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

চুল কাটাতে আসা আকদিয়া গ্রামের বাবুল মোল্যা বলেন, আমরা গরীব মানুষ আমরা বড় বড় সেলুনে গিয়ে চুল কাটাতে পারি না ৫০-৬০ টাকা খরচ করে তাই এভাবে নিচেই বসে অল্প টাকায় চুল কাটাই।

ছেলের চুল কাটাতে নিয়ে এসেছেন গোবরা গ্রামের তরুন দাস বলেন, ছেলের চুল কাটাতে ২০ টাকা দিলে হবে কিন্তু বড় দোকানে গেলে ৪০ টাকা দিতে হবে তাই হাটের দিনে নিয়ে আইছি।

নড়াইল সেলুন সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় শীল বলেন, আমরা আমাদের সমিতির মাধ্যমে চুলকাটা-সেভকরাসহ অন্যান্য কাজের মূল্য তালিকা নির্ধারণ করে দিয়েছি সেই তালিকা অনুসারে সেলুনগুলো পরিচালিত হয়ে থাকে। আমাদের তালিকার বাইরেও যারা এ পেশার সাথে রয়েছে বিভিন্নস্থানে তারা তাদের মত করে কাজ করে থাকেন বলেও জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর