ভরা মৌসুমেও পর্যটক শূন্য সুন্দরবন

বাগেরহাট, দেশের খবর

আবু হোসাইন সুমন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বাগেরহাট | 2023-08-26 01:42:44

শীতকালই মূলত সুন্দরবনের পর্যটন মৌসুম। সেই ভরা মৌসুমেও সুন্দরবনে দেখা মিলছে না পর্যটকদের। পর্যটক না থাকায় শূন্য হয়ে পড়েছে বনের দর্শনীয় স্থানগুলো। শুধু মৌসুম জুড়েই নয়, সারা বছর ধরেই পর্যটকের আনাগোনা কমছে সুন্দরবনে। ভ্রমণে অব্যবস্থাপনা, পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব, দর্শনীয় এলাকাগুলো আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে না তোলাসহ নানা কারণেই ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করতে পারছে না সুন্দরবন।

বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। এ বন দেখার ভীষণ আগ্রহ রয়েছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। প্রতি বছর শীত মৌসুমে পর্যটকদের ভিড় জমে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র করমজল, হাড়বাড়িয়া, হিরণপয়েন্ট, নীল কমল, কটকা-কচিখালী, দুবলাসহ বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু এবার পর্যটকদের আনাগোনা খুবই কম, একবারে নেই বললেই চলে। সুন্দরবনের সবচেয়ে কাছাকাছি পর্যটন কেন্দ্র করমজল পর্যটক কেন্দ্রটি এক কথায় শূন্য হয়ে পড়েছে। মৌসুমের এই সময়ে যেখানে পর্যটকদের ঢলে হিমশিম খেতে হতো বনপ্রহরীদের আর এখন সেই সময়ে তাদের অলস বসেই সময় কাটচ্ছে।

নানা অব্যবস্থাপনার কারণেই ক্রমেই কমছে পর্যটক আগমনের সংখ্যা। করমজলে নভেম্বর’২০১৭ সালে পর্যটক আসে ৬ হাজার ৩৬৮ জন আর নভেম্বর ২০১৮তে আসে ৫ হাজার ৬৫৯ জন। ডিসেম্বর’১৭তে ১৩ হাজার ২৫৪ জন আর ডিসেম্বর ২০১৮তে ৮ হাজার ৫৭০জন। জানুয়ারি ২০১৮তে ১১ হাজার ৩৯৭জন আর জানুয়ারি ২০১৯ এ এসেছে ৫ হাজার ৮৩২জন।

তারপরও স্বল্প সংখ্যক যে পর্যটক আসছেন সুন্দরবনে তাদের মুখেও রয়েছে নানা অব্যবস্থাপনা ও সুযোগ-সুবিধা না থাকার বিষয়গুলো। সুন্দরবনের প্রধান পর্যটন স্পট করমজলে একবার কেউ আসলে দ্বিতীয়বার আর কেউ আসতেই চান না। এর মূল কারণ হলো দীর্ঘদিনেও এখানে আকর্ষণীয় কোনো ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি, আনা হয়নি কোন ধরনের নতুনত্ব। পুরানো ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ফুট টেইলার এবং ওয়াচ টাওয়ারটি। আটকে রাখা কয়েকটি হরিণ, বানর ও কুমির ছাড়া তেমন কিছুই দেখার নেই সেখানে। রয়েছে বানরের ব্যাপক উৎপাতও।

দীর্ঘদিন ধরে একই অবকাঠামো ও নতুন কোন আকর্ষণ সৃষ্টি করতে না পারায় দিনকে দিন পর্যটকের সংখ্যা কমছে বলে জানিয়েছে করমজল পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আজাদ কবির।

তিনি আরো বলেন, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাবে এখানে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় বিশেষ করে নারী ও শিশুদের। তবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা গেলে পর্যটকদের আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশন’র চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, পর্যটন কেন্দ্রগুলো ভ্রমণের সুব্যবস্থা, আকর্ষনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, খাঁচায় বাঘ কিংবা অন্যান্য বন্যপ্রাণির শোভা বৃদ্ধিসহ দর্শনার্থীদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা গেলে পর্যটকদের আগমন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে। সেজন্য সরকারকে অবশ্যই এ পর্যটন শিল্পের প্রতি নজর দিতে হবে।

 

 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর