কালিয়াকৈরে অপহরণের অভিযোগে দুই এএসআই গ্রেফতার

গাজীপুর, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 06:12:12

গাজীপুরে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তাদের জেলা আদালতে পাঠানো হয়।

গ্রেফতারকৃত পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন- গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল্লাহ আল মামুন ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মুসরাফিকুর রহমান।

অপহরণের শিকার তিন যুবক হলেন- কালিয়াকৈর উপজেলার বড়ইবাড়ি এলাকার রায়হান সরকার, লাবিব হোসেন ও শ্রীপুর উপজেলার চন্নাপাড়া এলাকার নওশাদ ইসলাম।

অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগে পুলিশের ওই দুই সদস্যের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার কালিয়াকৈর থানায় মামলা করেন রায়হান সরকার। এই মামলায় ৬-৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

বিকেলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার সামসুন্নাহার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অভিযুক্ত দুই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের অপরাধের কোনো দায়ভার পুলিশ নেবে না, অপরাধ করলে কেউ ছাড় পাবে না। অপরাধ করলে এটি তাদের ব্যক্তিগত দায়ভার হিসেবে নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ব্যক্তিগত গাড়িতে রাজধানীর বাণিজ্য মেলার উদ্দেশে রওনা হন পাঁচ বন্ধু। বিকেল ৫টার দিকে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর এলাকায় শিলা-বৃষ্টি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নিতে যান। এ সময় তরিবুল্লাহ ও রাকিবুল রহমান নামে দুই বন্ধু গাড়ি থেকে নেমে পাশের দোকানে চা খেতে যান। বাকিরা গাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। এ সময় দু’টি গাড়ি নিয়ে সেখানে হাজির হন এএসআই মামুন ও মুসরাফিকুর। তারা সাদা পোশাকে ছিলেন। মুসরাফিকুরের মাইক্রোবাসে সাদাপোশাকের আরও কয়েকজন লোক ছিল।

অপহরণের শিকার ওই তরুণদের অভিযোগ, তাদের তিন বন্ধুকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তোলেন সাদাপোশাকে থাকা পুলিশ সদস্যরা। পরে তাদের টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের দেওড়া এলাকায় নির্মাণাধীন উড়াল সড়কের নিচে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিন বন্ধুকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা। না দিলে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। পরে বেশ কিছু সময় তাদের সঙ্গে টাকা নিয়ে দেন-দরবার হয়। একপর্যায়ে দুই এএসআই ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিতে রাজি হন।

অপহরণের কবল থেকে রক্ষা পাওয়া দুই বন্ধু তরিবুল্ল্যাহ ও রাকিবুল মুঠোফোনে পুরো ঘটনা কালিয়াকৈর থানা-পুলিশ এবং অপহৃত তিনজনের পরিবারের সদস্যদের জানান।

তরিবুল্ল্যাহ বলেন, তাদের অভিযোগ জানার পর কালিয়াকৈর থানা থেকে একটি দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তারা প্রাথমিকভাবে খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হন যে, এএসআই মামুন ও মুসরাফিকুর এই অপহরণের সঙ্গে জড়িত। পরে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন মজুমদার এএসআই মামুনকে ফোন করলে তিনি তিন তরুণকে তুলে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। দুই থানার সহযোগিতায় অপহৃত তিন তরুণকে বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে উদ্ধার করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর