হত্যার পর স্বামীর মরদেহে নৃশংসতা!

গাজীপুর, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 20:16:23

স্বামী রফিকুলের পাশাপাশি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন স্ত্রী জেবুন নাহারও। যা বেতন পেতেন তা থেকে প্রতি মাসে নিজের মা-বাবাকে খরচ বাবদ কিছু টাকা দিতে চাইতেন তিনি। কিন্তু বাধ সাধেন তার স্বামী। শুধু বাধাই নয়, ওইসব ঘটনায় তাকে বিভিন্ন সময় মারধরও করেছেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন জেবুন নাহার।

ফলে স্বামীর ওপর মাস খানেক ধরে অক্রোশ পোষণ করছিলেন তিনি। ফের ঝগড়া হলে স্বামীকে হত্যা করেন। হত্যার পর স্বামীর মরদেহে চালিয়েছেন নৃশংসতা। এই দম্পতির পাঁচ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) নিজ বাসার অদূরেই একটি বাঁশ ঝাড় থেকে রফিকুলের ছয় টুকরা বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীপুর থানা পুলিশ।

শ্রীপুর থানা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই হত্যাকাণ্ডে বর্ণনা দেন জেবুন নাহার। শনিবার (২৬ জানুয়ারি) জেবুন নাহার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম মোল্লা।

এসআই শহিদুল জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেবুন নাহার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয় তার (জেবুন)। ঝগড়ার একপর্যায়ে ইট দিয়ে রফিকুল ইসলাম শেখের মাথায় আঘাত করেন তিনি। এতে রফিকুল অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন রফিকুলকে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহটি ঘরের ওয়ারড্রবের ভেতর রেখে কর্মস্থল চলে যান জেবুন। হত্যাকাণ্ডের সময় শিশু মেয়েটি তার ছোট বোনের বাসায় (পাশের কক্ষ) ছিল।

তিনি আরও জানান, রাত ৮টার দিকে কর্মস্থল থেকে ফিরে ১১টা পর্যন্ত তিনি বোনের বাসায় ছিলেন। সেখানেই রাতের খাবার খান জেবুন। রাত ১১টার দিকে নিজের বাসায় গিয়ে ওয়ারড্রব থেকে স্বামীর মরদেহ বের করে প্রথমে দুই পা কাটেন। পরে দুই হাত কেটে মাথাও বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। ছয় টুকরো মরদেহ বস্তাবন্দী করেন আর দুই হাত ও খণ্ডিত মাথা ময়লা ফেলার ড্রামের ভেতর ফেলেন। পরে বাসা থেকে কয়েকশ’ গজ দূরে বাঁশ ঝাড়ের সামনে ময়লার ভাগাড়ের মধ্যে বস্তাবন্দী দেহটি ফেলে দেন। এর প্রায় ৪০০ গজ দূরে শৌচাগারের পেছনে নিয়ে ফেলেন পায়ের দুটি টুকরো। নৃশংসতায় ব্যবহৃত বটিটিও বাইরে লুকিয়ে রেখেছিলেন স্ত্রী জেবুন নাহার।

এসআই শহিদুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘জেবুন নাহারের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রাতেই নৃশংসতায় ব্যবহৃত বটিটি জব্দ করা হয়েছে।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় রফিকুল ইসলামের বাবা আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে ছেলের বউ জেবুন নাহারকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর