পর্যটক হারাচ্ছে সোনাকাটা ইকো-ট্যুরিজম

বরগুনা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বরগুনা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-21 15:30:12

অযত্ন অবহেলা, রাস্তা ও ব্রিজ সংস্কারের অভাবে পর্যটক শূন্য হতে চলেছে বরগুনার জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনের সোনাকাটা ইকো-ট্যুরিজম। যে দু-একজন পর্যটক এখানের নাম-যশ শুনে আসছেন তারাও ফিরে যাচ্ছেন হতাশ হয়ে। পর্যটকরা বলছেন, ‘এখানে নিরাপত্তহীনতা চরমে। ভয়ঙ্কর বন্য প্রাণি বেষ্টনি থেকে বের হয়ে অবাধে বিচরণ করছে বনের মধ্যে। যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।’

২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর বরগুনার তালতলী উপজেলার টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনে সোনাকাটা ইকো-ট্যুরিজমের উদ্ভোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর আর কোন উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি এ পর্যটন কেন্দ্রে। ‘সোনাকাটা ইকো-ট্যুরিজম’ গভীর বনে ঢুকতেই দেখা মিলবে হরিণের বেষ্টনির। শুধু হরিণ নয়, এতে আলাদা আলাদা বেষ্টনিতে রাখা কুমির, শুকর, মেছোবাঘসহ নানান ধরনের বন্য প্রাণি। কিন্তু সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পরেছে ইকোট্যুরিজমটি। বনের শেষে অপার সৌন্দর্যের লীলা ভূমিতে গিয়ে সাগরের বিশাল ঢেউ, সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দেখতে যাওয়ার রাস্তা ও গভীর বনে প্রবেশের রাস্তাগুলো নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ভেঙ্গে গেছে রাস্তা। বনের মধ্য থেকে সমুদ্র পর্যন্ত যেতে কাঠের ব্রিজগুলোও ভেঙ্গে গেছে। পর্যটকদের বসার জন্য নির্মিত গোলঘরসহ সকল স্থাপনা ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে। এ অবস্থায় পর্যটকরা হতাশ ও বিব্রত হচ্ছেন।

কয়েকজন পর্যটক বার্তা২৪.কমকে জানান, সময়ের সাথে সাথে পাল্টে গেছে এ ইকো-ট্যুরিজমের চিত্র, এখন পর্যটন কেন্দ্রের বেষ্টনিতে দেখা মিলবে শুধু হরিণের। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বাঘ ও শুকর বেষ্টনি থেকে বের হয়ে বাইরে বিচরণ করছে। বাড়ছে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তাহীনতা।

স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল মিয়া বলেন, দিনে দিনে কমছে পর্যটকের সংখ্যা। সংরক্ষিত বনটিকে সোনাকাটা ইকো-ট্যুরিজম ঘোষণার পর থেকে সংস্কারের ছোয়া লাগেনি এখনো। এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে এ পার্কটি।

বরিশাল থেকে ঘুরতে আসা কয়েকজন পর্যটকের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত পর্যটন মৌসুমে তারা এসেছিলেন এ পর্যটন কেন্দ্রে। তখন পরিবেশ অনেক ভাল ছিল। আর এখন সব কটি ব্রিজ সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। এতটা ঝুঁকি জানলে আসতেন না তারা।

আরিফ হোসেন ফজল, জামাল মল্লিক, হাইরাজ মাঝিসহ আরও কয়েকজন পর্যটকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন হয়ে গেছে এ পর্যটন কেন্দ্রের অনেক কিছু। মেষ, বাঘ বেষ্টনি থেকে বের হয়ে গেছে। শুকরগুলোও নেই বেষ্টনিতে। যে কোন সময় পর্যটকদের উপর হামলা করতে পারে এসব ভয়ংকর প্রাণী।

তারা আরও বলেন, এ পর্যটন কেন্দ্রে একই সাথে দেখা যায় বনের সৌন্দর্য্য, বন্য প্রাণী ও অপরুপ সাগর। দেখা যায় সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়। তবে অব্যবস্থাপনা ও সমস্যায় পর্যটক কমছে। আগে পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার পর্যটক আসতো। এখন ১০/২০ জনও আসে না।

বরগুনা জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ জানান. খুব দ্রুত সোনাকাটা ইকো-ট্যুরিজমের ব্রিজ ও রাস্তা রাস্তা মেরামত করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর